আপনজন ডেস্ক: একাধিক দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করতে প্রথমবারের মতো কাঠগড়ায় দাঁড়ালেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার বিরুদ্ধে পৃথক ৩টি মামলা আদালতে বিচারাধীন। এসব মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে তার।
সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে এসব মামলা করা হয়। জেরুজালেম জেলা আদালতে বিচার শুরু হয় পরের বছর। তবে নেতানিয়াহু তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবারই প্রথমবার আদালতে সাক্ষ্য দিতে উঠেছেন নেতানিয়াহু। তিনি তারা বিরুদ্ধে আনা কেস ১০০০, কেস ২০০০, এবং কেস ৪০০০ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করবেন। এসব মামলার অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ঘুষ, প্রতারণা এবং আস্থার লঙ্ঘন।
কেস ১০০০ : গিফটস অ্যাফেয়ার এই মামলায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও আস্থা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু এবং তার স্ত্রী সারা দুই ধনী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিলাসবহুল উপহার গ্রহণ করেছেন। বিনিময়ে তিনি তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে সহায়তা করেছেন। উপহারগুলোর মূল্য ছিল প্রায় ৭ লাখ শেকেল (১৮৬,০০০ ডলার)।
কেস ২০০০ : মিডিয়া চুক্তি
এই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, নেতানিয়াহু ইসরায়েলের সংবাদপত্র ‘ইডিয়থ আহরনথের’ মালিক অ্যারন মোজেসের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন। এতে নেতানিয়াহুর পক্ষে ভালো কভারেজের বিনিময়ে প্রতিদ্বন্দ্বী পত্রিকা ইসরায়েল হায়োমের প্রচার সীমিত করার জন্য আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা ছিল।
কেস ৪০০০ : টেলিকম দুর্নীতি
এই মামলায় বলা হয়েছে যে, নেতানিয়াহু টেলিকম কোম্পানি বেজেককে বিলিয়ন ডলারের নিয়ন্ত্রক সুবিধা দিয়েছেন। বিনিময়ে, বেজেকের মালিক শাওল এলোভিচ নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রীর পক্ষে অনুকূল সংবাদ প্রচার করেছেন। এ ক্ষেত্রে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম আরও আগে শুরু হলেও গাজা যুদ্ধ এটিকে পাবলিক এজেন্ডা থেকে সরিয়ে দেয়। তবে এরআগে নেতানিয়াহুর অতি-ডানপন্থী সরকার আদালতের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি বিল পাশের চেষ্টা চালিয়েছিল। নেতানিয়াহুর এই প্রচেষ্টা ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দেয়। পরে নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনা পরিত্যাগ করেন।
নেতানিয়াহু অবশ্য এটাকে বিচার বিভাগীয় সংস্কার এবং তার বিচারের সাথে এর কোনো যোগসূত্র নেই ছিলনা বলে দাবি করেন। তবে অনেকে মনে করেন, আদালতের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নেতানিয়াহু তার নিজের বিরুদ্ধে মামলাগুলো থেকে দায়মুক্তি নিয়ে নিতেন।
নেতানিয়াহু বলে আসছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও মিডিয়ার দ্বারা পরিচালিত একটি ষড়যন্ত্র। তবে এ মামলাগুলো নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আদালতের রায় তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct