মোল্লা মুয়াজ ইসলাম , বর্ধমান, আপনজন: সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শান্ত পশ্চিমবাংলাকে কিভাবে অশান্ত করা যায় তার একটা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। খণ্ডঘোষের সুলতানপুর বলে একটি গ্রাম আছে, যেখানে কোনো মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন না। এই গ্রামের শতাধিক বছর ধরে নিয়ম হয়ে আসছে কালীপূজার পরই সেই মূর্তিকে বিভিন্নভাবে ব্যবচ্ছেদ করা হয়। হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা সেই কাজটি নিষ্ঠার সঙ্গে করে আসছেন। আর সেই ভিডিওকে কাজে লাগিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার একটি প্রচেষ্টা চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। ভিডিওটিকে বাংলাদেশের ঘটনা বলে চালিয়ে দিয়ে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পরিকল্পনা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই এলাকার মানুষেরা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তারা বলেছেন, “আমরা এই এলাকার হিন্দু-মুসলমান মিল মহব্বতের সঙ্গে বাস করি। আমাদের ভিডিওকে যারা বিভিন্নভাবে এডিটিং করে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, তারা সমাজের ক্ষতি করছেন।”
এই বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। খণ্ডঘোষের ওসিকে জানালে তিনি বলেন, “সাইবার বিভাগে জানানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ থানার সুলতানপুর গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। ভাইরাল ভিডিওটিতে বাংলাদেশের একটি কালী মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের দাবি করা হয়েছিল। তবে সুলতানপুর গ্রামের কালীপুজোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভিডিওটি তাদের গ্রামের কালী নিরঞ্জনের সময় ধারণ করা, যেখানে স্থানীয় রীতিনীতি অনুযায়ী দেবীর অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে বিসর্জন দেওয়া হয়।
কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে জানান, “আমাদের নিরঞ্জন ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে সম্পন্ন হয়েছে, এবং এটি আমাদের বহু বছরের প্রথা। ভিডিওটি বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে, যা আমরা তীব্র নিন্দা করছি।”
এই ঘটনার ফলে সুলতানপুর ও আশেপাশের এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। স্থানীয় প্রশাসন ও পুজো কমিটি মানুষকে শান্ত থাকার এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct