আপনজন ডেস্ক: সম্প্রতি ভিয়েতনামের প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ট্রুং মাই লান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ব্যাংক জালিয়াতির জন্য মৃত্যুদণ্ডের আপিল হারিয়েছেন। তিনি সাইগন কমার্শিয়াল ব্যাংককে দীর্ঘ ১০ বছর গোপনে নিয়ন্ত্রণ করেছেন এবং শেল কোম্পানির মাধ্যমে ৪৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ উত্তোলন করেছেন। তার বিরুদ্ধে ২৭ বিলিয়ন ডলার অপব্যবহার এবং ১২ বিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল, যার জন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় দেয়া হয়েছিল। ট্রুং মাই লান যদি ৭৫% অর্থ, অর্থাৎ ৯ বিলিয়ন ডলার ফেরত দিতে পারেন, তবে তার মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে তাকে আজীবন কারাদণ্ডে পরিণত করা হবে। তবে, সম্প্রতি আদালত তার মৃত্যুদণ্ডের আপিল খারিজ করে দিয়েছে।তবে, তিনি এখনও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আবেদন করতে পারেন। ট্রুং মাই লান ১৯৫৬ সালে সাইগন শহরে একটি চিনা-ভিয়েতনামী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি তার মা’এর সাথে কসমেটিকস বিক্রি শুরু করেন এবং পরে ১৯৮৬ সালে কমিউনিস্ট পার্টি অর্থনৈতিক সংস্কার চালু করার পর ভূমি এবং সম্পত্তি কেনার মাধ্যমে ব্যবসায়ে প্রবেশ করেন। তিনি আজীবন ভিয়েতনামের অন্যতম বড় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি, ভ্যান থিন ফাট গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মোট ৮৫ জন আসামি ছিলেন, যার মধ্যে ৪ জন আজীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন, এবং অন্যান্যরা ২০ থেকে ৩ বছরের কারাদণ্ড বা স্থগিত দণ্ড পান। সাইগন কমার্শিয়াল ব্যাংককে পুনঃপুঁজি দিতে সরকারের প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। প্রসিকিউটররা তার অপরাধকে “অভূতপূর্ব এবং বিশাল” বলে উল্লেখ করেছেন এবং শিথিলতার কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন। তবে, ট্রুং মাই লানের আইনজীবীরা বলছেন, মৃত্যুদণ্ডের কারণে তার জন্য সম্পত্তি বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়ছে এবং সময় সাপেক্ষ। তারা আদালতের কাছে আবেদন করেছেন যেন তাকে জীবনকাল কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যাতে তিনি আরও ভালো দামে তার সম্পত্তি বিক্রি করতে পারেন।
ভিয়েতনামে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে অনেক গোপনীয়তা রক্ষিত থাকে এবং কতজন ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডের সাজা ভোগ করছেন তা সরকার প্রকাশ করে না। মানবাধিকার সংস্থাগুলির দাবি, ভিয়েতনামে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সংখ্যা ১,০০০ এরও বেশি এবং এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী দেশ।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct