এম মেহেদী সানি, কলকাতা, আপনজন: পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনুমোদিত রাজ্যের আনএডেড মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মিড ডে মিল চালু করার জন্য মিড-ডে-মিল সেকশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আবেদন করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। উল্লেখ্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনুমোদিত রাজ্যে ২৩৫ টি আনএডেড মাদ্রাসা রয়েছে। এই মাদ্রাসাগুলির শিক্ষক শিক্ষা-কর্মীদের ভাতা সরকার বহন করলেও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা মিড-ডে-মিল থেকে বঞ্চিত। জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট রেকগনাইজড আনএডেড মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’ বিকাশ ভবন, মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ, নবান্ন, মিড-ডে-মিল সেকশনে বহুবার দরবার করেছে। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক আব্দুল ওহাব মোল্লা জানান, ‘আমরা শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের মিড-ডে-মিল চালু করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কোনো সুরাহা হয়নি গত ৩০শে সেপ্টেম্বর আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে মিড ডে মিল সেকশনে প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। তিনি আমাদের বলেন, সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর থেকে আমাদেরকে এ বিষয়ে যদি চিঠি করেন তাহলে গুরুত্ব পাবে।’ মিড ডে মিল সেকশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টরের কথা মতো গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট রেকগনাইজ আনএডেড মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র কর্মকর্তারা নবান্নে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব পিবি সেলিমকে বিষয়টি জানান। তারপরেই সোমবার সপ্তাহের শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মিড-ডে-মিল সেকশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর কে আনএডেড মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মিড-ডে-মিল চালু করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাজ্যের প্রত্যন্ত সংখ্যালঘু এলাকাগুলোতে অবস্থিত আনএডেড মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগই দরিদ্র অসহায় পরিবার থেকে উঠে এসেছে। ফলে দুপুরের খাবারটা ছাত্র-ছাত্রীরা যদি বিদ্যালয় থেকেই পেয়ে যায় তাহলে কিছুটা সুরাহা হয় বলে দাবি শিক্ষকদের। তবে এতদিন কেন মিড-ডে-মিল চালু করা যায়নি সেবিষয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ায় মিড-ডে-মিল চালুর ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষা কর্মী, শিক্ষার্থীরা। িরাজ্যে ২৩৫ টি আনএডেড মাদ্রাসার মধ্যে কোচবিহারে ৫৪ টি মুর্শিদাবাদ জেলায় ৪৮ টি উত্তর দিনাজপুরে ৪২ টি মাদ্রাসা রয়েছে যা সবগুলি প্রায় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত প্রত্যন্ত এলাকায়। আনএডেড মাদ্রাসার সিনিয়র বিভাগে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত, হাই মাদ্রাসায় পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত এবং জুনিয়র হাই মাদ্রাসায় পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ দান করা হয়। ফলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মিড-ডে-মিলের আওতায় থাকায় অনেকটাই সুরাহা হবে বলে মনে করছেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা। তবে নবান্ন সূত্রে খবর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের তৎপরতায় রাজ্যের আনএডেড মাদ্রাসার প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী খুব দ্রুতই মিড-ডে-মিল পেতে চলেছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct