সারিউল ইসলাম , মুর্শিদাবাদ, আপনজন: আবাস তালিকায় নাম তোলার জন্য তৃণমূল নেতাকে কাটমানি দিয়েছিল। কিন্তু তালিকায় নাম না থাকায় কাটমানির টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে আক্রান্ত হয় এক প্রৌঢ়। রবিবার সকালে মৃত্যু মৃত্যু হয় তার। কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। মৃতের নাম আতাবুর রহমান(৬০), তার বাড়ি রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লকের মিঠিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুকুন্দপুর এলাকায়। অভিযোগ, আব্দুল লতিব নামের স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা আবাসে ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে পাঁচ হাজার টাকা কাটমানি নিয়েছিল। কিন্তু দিন কয়েক আগে প্রকাশিত আবাসের খসড়া তালিকায় আতাবুর রহমানের নাম আসেনি। কাটমানির টাকা দেওয়ার পরেও তালিকায় নাম না থাকায় শনিবার সন্ধ্যায় কাটমানির টাকা ফেরত চাইতে যায় ওই প্রৌঢ়। তাকে সেখানে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ রঘুনাথগঞ্জের মিঠিপুরে এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। আতাবুর রহমানের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। রবিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই মৃত্যু হয় আক্রান্ত প্রৌঢ়ের।
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার নাম আব্দুল লতিব অরফে মিঠুন শেখ। তার বাড়ি ওই এলাকাতেই বলে জানা গিয়েছে। শনিবার রাতে আতাবুরের পরিবারের তরফ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। রবিবার দুপুরে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
অন্যদিকে মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছাতেই রবিবার সকাল থেকে নয়া মুকুন্দপুর এলাকায় পথ অবরোধ করে বাম-কংগ্রেস কর্মীরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরবর্তীতে অবরোধ উঠে যায়।
ঘটনা প্রসঙ্গে কংগ্রেসের জেলা কমিটির এক নেতা বলেন, ‘তৃণমূল কাটমানি ছাড়া কিছু বোঝে না। জনগনের প্রাপ্য টাকা তৃণমূল নেতারা আগে পাবে কাটমানি হিসেবে।’ অন্যদিকে সিপিএমের অভিযোগ, ‘শুধুমাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছে তাতেই শেষ নয়। এরকম ঘটনা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। তৃণমূল নেতারা বলছে তারা কাটমানি পেলেই আবাসের তালিকায় নাম তুলে দিতে পারবে। কিন্তু আসলে ওরকম কিছুই না। সাধারণ মানুষকে দিনের আলোয় লুট করছে তারা।’
যদিও এ ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘অভিযুক্তের সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই। যদি এধরনের কোনো ঘটনা ঘটে তবে তার যথাযথ তদন্ত করে প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ নিক।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct