সারিউল ইসলাম , মুর্শিদাবাদ, আপনজন: প্রশাসনের নাকের ডগা থেকে রাতারাতি হারিয়ে গেল আস্ত আম বাগান। সপ্তাহ তিনেক আগেও বাগানে কয়েকশো আমগাছ ছিল। কিন্তু তার মাঝেই হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেল সেই বাগানের আমগাছ। মুর্শিদাবাদ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘিপাড়া এলাকার ঘটনা।
এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদে শহর কংগ্রেসের সভাপতি অর্ণব রায় বলেন, ‘একমাস আগে প্রথম যখন বাগানের গাছ কাটা শুরু হয় তখন মহকুমা শাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছিলাম। কিন্তু সেদিন মহকুমা শাসক গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করলেও পরবর্তীতে একদিন সকালে সূর্য না উঠতেই বাগানের গাছ কেটে সাফ করে দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘তৃণমূল নেতাদের মদতে এক শ্রেনীর দুষ্কৃতী প্রশাসনের নাকের ডগায় আমবাগান ধ্বংস করছে, অথচ প্রশাসন নির্বিকার। একে অপরের ঘাড়ে দায় ঠেলতে ব্যস্ত তারা। কেউ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না, পদক্ষেপ নেওয়ার নাটক করা হচ্ছে মাত্র। একদিনের জন্য নাটক করা হচ্ছে, তারপর যেই কার সেই। প্রশাসন বলে আর কিছু নেই।’ এই ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএমের মুর্শিদাবাদ পশ্চিম এরিয়া কমিটির সম্পাদক মনু শেখ বলেন, ‘যেসব দুষ্কৃতি গাছ কাটছে বা জমি মাফিয়া তারা তৃণমূলের ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠেছে। ঘটনাস্থল থেকে মহকুমা অফিস বা থানা মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। প্রশাসন চাইলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। আর তাতে আরও বেশি মদত পাচ্ছে তারা।’
ঘটনা প্রসঙ্গে লালবাগের মহকুমা শাসকের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। যদিও এবিষয়ে মুর্শিদাবাদ পৌরসভার পৌরপিতা ইন্দ্রজিৎ ধর বলেন, ‘গাছ কাটার জন্য পৌরসভার কাছ থেকে নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হয়। কিন্তু সেই অনুমতি না নিয়েই দুষ্কৃতীরা গাছ কেটেছে। প্রথম যেদিন গাছ কাটে, খবর পেয়ে সেদিন পৌরসভার প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছিলাম এবং মহকুমা শাসক কে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। সেদিন গাছ কাটা বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে গাছ উধাও হওয়ায় আমরা সকলেই হতভম্ব। আশা করছি দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
স্থানীয় সূত্রে খবর, মহকুমা শাসক প্রথম দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করেন। বনদপ্তরের কথা মত কেটে ফেলা গাছগুলির বদলে চারাগাছ লাগানো হয় সেখানে। কিন্তু তার কয়েক দিনের মধ্যে হঠাৎ করেই সূর্য ওঠার আগে একসঙ্গে গাছ কাটা শুরু হয়। সূর্যের আলো গাছের পাতায় পড়ার আগেই গাছ মাটিতে পড়েছিল।
কয়েকশো বছরের পুরনো আমবাগান শহরের বুক থেকে মুহূর্তে উধাও হয়ে গেল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct