আপনজন ডেস্ক: বার্সেলোনা ১: ২ লাস পালমাস। মৌসুমটা দারুণভাবেই শুরু করেছিল বার্সেলোনা। একের পর এক জয় নতুন করে রাজত্ব প্রতিষ্ঠার স্বপ্নও দেখিয়েছিল তাদের। বার্সার এই উত্থানে সামনে থেকে যাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তাঁদের অন্যতম ছিলেন লামিনে ইয়ামাল। কিন্তু এ মাসের শুরুতে ইয়ামাল চোটে পড়ে ছিটকে গেলে পথ হারায় বার্সা। এই উইঙ্গারকে ছাড়া লিগে দুই ম্যাচ খেলে পায়নি কোনো জয়ের দেখা। একটি হারলেও ড্র করেছে অন্য ম্যাচে। আজ ঘরের মাঠ স্তাদিও অলিম্পিক লুইস স্টেডিয়ামে লাস পালমাসের বিপক্ষে ফিরেছিলেন ইয়ামাল। কিন্তু দলের অন্যতম সেরা তারকার ফেরাও বার্সাকে হার থেকে বাঁচাতে পারেনি। ম্যাচজুড়ে দারুণ খেলা লাস পালমাসের কাছে বার্সা হেরেছে ২–১ গোলে। এর ফলে ঘরের মাঠে টানা ১১ জয়ের পর হারের মুখ দেখল বার্সা। বার্সার এই হারে হাসি চওড়া হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের। এল ক্লাসিকোর পর ৬ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়া দলটি এখন শিরোপা লড়াইয়ে ফিরেছে দারুণভাবে। ১৫ ম্যাচে শীর্ষে থাকা বার্সার পয়েন্ট ৩৪। দুই ম্যাচ কম খেলে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে রিয়াল আছে ২ নম্বরে। অর্থাৎ হাতে থাকা বাড়তি দুই ম্যাচে জিতলে বার্সাকে ছাড়িয়ে শীর্ষে উঠে আসার সুযোগ থাকবে রিয়ালের। আজ ম্যাচের ৫ম মিনিটেই দারুণ সুযোগ এসেছিল বার্সার সামনে। তবে অল্পের জন্য গোলবঞ্চিত হন ফেরমিন লোপেজ। ১১ মিনিটে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করে লাস পালমাস। বক্সের ভেতর একাধিক চেষ্টার পরও গোল করতে পারেনি তারা। আক্রমণ ও বল দখলে বার্সা দাপট দেখালেও লাস পালমাসও একেবারে পিছিয়ে ছিল না। প্রতি-আক্রমণে বারবার বার্সা রক্ষণকে চাপে ফেলেছে তারা। পাশাপাশি রক্ষণেও বেশ দৃঢ়তা দেখিয়েছে তারা। বিশেষ করে বক্সের ভেতর আঁটসাঁট রক্ষণদেয়াল তৈরি করে বার্সার শট নেওয়ার সুযোগ সংকুচিত করে দেয় তারা।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে রাফিনিয়া বল জাল জড়ালেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয় সেই গোল। যোগ করা সময়ে আবারও সেই রাফিনিয়া অল্পের জন্য গোলবঞ্চিত হন। গাভির দারুণ এক পাসে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের শট বারে লাগায় গোল পাওয়া হয়নি বার্সার।
গোলের জন্য মরিয়া হান্সি ফ্লিক বিরতির পরপরই বদলি হিসেবে মাঠে নামান ইয়ামালকে। কিন্তু বার্সাকে চমকে দিয়ে ম্যাচে ৪৯ মিনিটে উল্টো এগিয়ে যায় পালমাস। প্রতি-আক্রমণ থেকে বল পেয়েছে দারুণ ফিনিশিংয়ে গোল করেন বার্সারই সাবেক খেলোয়াড় সান্দ্রো রামিরেজ। গোল খেয়ে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে বার্সেলোনা। একের পর এক আক্রমণে লাস পালমাসের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলে তারা।
ম্যাচের ৫৮ মিনিটে অল্পের জন্য গোল পাননি ইয়ামাল। তবে ৬১ মিনিটে ভুল করেননি রাফিনিয়া। দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্রাজিলিয়ান অসাধারণ এক শটে গোল করে ম্যাচে ফেরান দলকে। যদিও এই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি বার্সা। হ্যাভিয়ের মুনোজের অসাধারণ এক পাসে বল পেয়ে দারুণভাবে বার্সার বক্সে ঢুকে লক্ষ্যভেদ করেন ফাবিও সিলভা।
দ্বিতীয়বারের মতো পিছিয়ে পড়ে গোলের জন্য রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়ে বার্সা। পরপর কয়েকবার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল তারা। কিন্তু লাস পালমাসের রক্ষণদেয়াল ভাঙতে পারেনি তারা। এ জন্য অবশ্য বিশেষ কৃতিত্ব দিতে হবে পালমাসের গোলরক্ষক জেসপার সিলেসনকে। দারুণ কিছু সেভ করেছেন তিনি। ম্যাচ যতই সামনে এগোচ্ছিল, বার্সার আক্রমণের ঝড় ততই বাড়ছিল। কিন্তু গোল করার আসল কাজটিই করতে পারছিল না তারা। ৮২ মিনিটে আবারও সেই সিলেসনের বীরত্ব। এবার ফ্রি-কিক থেকে রাফিনিয়ার শট অবিশ্বাস্য দক্ষতায় পালমাসকে রক্ষা করেন সাবেক এই বার্সা গোলরক্ষক।
শেষ দিকে বার্সা আক্রমণের পর আক্রমণে কাঁপিয়ে দেয় পালমাসের রক্ষণকে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলটি আর মেলেনি। শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে দলটিকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct