সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: জমির আলপথ ধরে জল কাদা ডিঙ্গিয়ে জুতো হাতে স্কুলে যাচ্ছে ছাত্র ছাত্রীরা- একদিন নয়, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতিদিনকার এই ছবিটাই দেখতে অভ্যস্ত গঙ্গাজলঘাটির নতুনগ্রাম, হালাইগড়িয়া, বাগরাকোন্দা গ্রামের মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গঙ্গাজলঘাটির ওই তিনটি গ্রামের শতাধিক পড়ুয়া দেড় কিলো মিটার দূরত্বের বিহারজুড়িয়া হাই স্কুলে পড়াশুনা করে। কিন্তু মাত্র ওই দেড় কিলোমিটার পথই চরম দূশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক থেকে শিক্ষক শিক্ষিকা প্রত্যেকের কাছে। জমির আল, ঝোপ-ঝাড় আর জল কাদা পেরিয়ে পদে পদে অসংখ্য বিপদ আর সাপের উপদ্রবকে সঙ্গী করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পৌঁছাতে হয় স্কুলে। স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথেও একই সমস্যায় পড়তে হয় ছাত্র ছাত্রীদের। তবে ওই পথ মাড়াতে না চাইলে দেড় কিলোমিটারের পথ ছ’কিলোমিটার ঘুরে পৌঁছাতে হবে স্কুলে।
দীর্ঘদিনের এই সমস্যার বিষয়টি অজানা নয় প্রশাসনের। বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে বারবার জানিয়েও কোন কাজ হয়নি, ফলে এলাকায় স্কুল ছুটের সংখ্যাও বাড়ছে বলে এলাকাবাসীদের তরফে দাবি করা হয়েছে। ছাত্র ছাত্রীদের দাবি, বর্ষার দিন গুলিতে স্কুলে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। শুধুমাত্র রাস্তার অভাবে স্কুল কামাই নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিহার জুড়িয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অংশুমান মণ্ডল বলেন, ওই গ্রাম গুলির ছেলে মেয়েরা যথেষ্ট মেধাবী। কিন্তু রাস্তার কারণে তাদের প্রতিদিন স্কুলে পৌঁছানোটাই চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান জরুরী বলে তিনি জানান।
আর এবিষয়ে শাসক দলকে আক্রমণের সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি বিরোধী বিজেপি। দলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডলের দাবি, পথশ্রী প্রকল্পের নামে বিজ্ঞাপনে ভরিয়ে ফেলা হচ্ছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি, গঙ্গাজলঘাটির এই ছবিই তার জ্বলন্ত প্রমাণ বলে তিনি দাবি করেন।
যদিও তৃণমূল নেতা ও গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নিমাই মাজির দাবি মূলত জমি জটেই ওই রাস্তা তৈরী করা সম্ভব হয়নি। একই সঙ্গে ওই রাস্তা তৈরীর আবেদনও তাঁরা লিখিত ভাবে পাননি। আবেদন করা হলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে তিনি জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct