আপনজন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলকে “ধর্মনিরপেক্ষতা বিরোধী” বলে বর্ণনা করেছেন। বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, কেন্দ্র এই বিষয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করেনি। মমতা বলেন, বিলটি যুক্তরাষ্ট্রীয় ও ধর্মনিরপেক্ষতা বিরোধী। এটি একটি নির্দিষ্ট অংশকে কলঙ্কিত করার ইচ্ছাকৃত প্রয়াস। মুসলমানদের অধিকার হরণ করবে। ওয়াকফ বিল নিয়ে কেন্দ্র আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেনি। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যদি কোনও ধর্মকে আক্রমণ করা হয়, তাহলে তিনি মনেপ্রাণে তার নিন্দা করবেন।উল্লেখ্য, বিতর্কিত বিলটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৩৪ সালে ব্রিটিশ আমলে ওয়াকফ বিষয়গুলি একটি আইনের আওতায় আনা হয়েছিল এবং স্বাধীনতার পরে এটি সংশোধন করা হয়েছিল এবং ১৯৯৫ সালে আরও একটি সংশোধনী হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট লোকসভায় বিলটি পেশ করেছিল, মূলত এটি সংশোধন করার জন্য। আমি বিশ্বাস করি, এটা যদি আইনে পরিণত হয়, তাহলে ওয়াকফ ধ্বংস হয়ে যাবে।তিনি বলেন, কেন্দ্রের উচিত ছিল রাজ্যগুলির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা, কারণ সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের মতো এখানেও রাজ্য সংস্থা রয়েছে। আর এটি একটি আধা বিচার বিভাগীয় সংস্থা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই বিল একটি ধর্মের বিরুদ্ধে। ২৬ নভেম্বর আমরা সংবিধানের ৭৫তম বার্ষিকী পালন করেছি। আমরা ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দেশ। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যই আমাদের ধর্ম। এই বিল সাম্যের মূল চেতনা এবং যে কোনও ধর্ম পালনের অধিকারের পরিপন্থী। মমতা দাবি করেন, মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দু এবং অন্যান্য ধর্মের মানুষের উন্নয়নের জন্য ওয়াকফ সম্পত্তি করেন মুসলিমরা। ওয়াকফের জমিতে স্কুল, হোস্টেল এবং হাসপাতাল তৈরি করা হযেছে। বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পরে বুলডোজার দিয়ে এই জমিতে বসবাসকারীদের সরানো হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
মমতার বক্তব্য, হিন্দু, মুসলিম, শিখ, ইসাইয়াহ সবাই আমাদের বন্ধু। আমরা সবার জন্য, কোনো একক ধর্মের পক্ষে নই। তবে কোনো ধর্মে নির্যাতন হলে আমরা তার নিন্দা করি। আমার মনে হয় রাজনৈতিক কারণে ওয়াকফ সংশোধনী বিল করা হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct