আপনজন ডেস্ক: যুদ্ধকবলিত মায়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহী জোটের সদস্য তাআং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) শান্তি আলোচনায় অংশ নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এক বছর ধরে মায়ানমার-চীন সীমান্তে চলমান সংঘর্ষের পর সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে দলটি এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জান্তার ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি চীনের দিক থেকে বাড়তে থাকা চাপের পরিপ্রেক্ষিতে টিএনএলএ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে মায়ানমারের সামরিক বাহিনীকে স্থিতিশীলতার রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচনা করে আসা চীন এখন মধ্যস্থতার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০২১ সালে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই মায়ানমারে অস্থিরতা চলছে। সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রথমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও পরে সশস্ত্র প্রতিরোধের মাধ্যমে দেশটিতে একাধিক ফ্রন্টে বিদ্রোহ শুরু হয়। টিএনএলএ তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সামরিক বাহিনীর বিমান হামলা বন্ধের দাবি জানিয়েছে। চীনের মধ্যস্থতার প্রশংসা জানিয়ে দলটির মুখপাত্র লওয়ে ইয়াই ও বলেছেন, জনগণ বিমান হামলাসহ বিভিন্ন হুমকির শিকার হচ্ছে। তাই এর সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। ২০২২ সালে শুরু হওয়া ‘অপারেশন ১০২৭’-এর বিদ্রোহী জোটের অংশ টিএনএলএ। তারা সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তাদের অভিযানে কয়েকটি শহর ও সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। চীনের মধ্যস্থতায় জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহী জোট জানুয়ারিতে একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছিল। তবে, সেই চুক্তি জুনে অকার্যকর হয়ে পড়লে পুনরায় সংঘাত শুরু হয়। জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) চীনের প্রতি জনগণের আকাঙ্ক্ষার দিকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এনইউজির মুখপাত্র কিয়াও জাও বলেছেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা বিরোধী কোনও আলোচনা শুরু করা উচিত নয়। এটি দেশের শান্তির জন্য সহায়ক হবে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়ানমারে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। বিদ্রোহীদের আলোচনার আহ্বান জান্তা ও চীনের সঙ্গে ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct