নিজস্ব প্রতিবেদক, মেদিনীপুর, আপনজন: মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর ভেতরে দালাল চক্র নিয়ে বিভিন্ন বার প্রশ্ন উঠেছিল। প্রশাসন পদক্ষেপ নিচ্ছিল। প্রতি মুহুর্তে মাইকিং করে সেই বিষয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদেরও সতর্ক করার ব্যবস্থা হয়েছে হাসপাতাল এর পক্ষ থেকে। তারপরেও একদল লোকজন বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে রোগীদের রক্ত ও বিভিন্ন পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে প্ররোচনা দিচ্ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসকরা যেই রক্ত বা বিভিন্ন পরীক্ষা করার জন্য প্রেসক্রিপশন করে দিচ্ছেন আউটডোরে, অমনি আগে থেকে ওত পেতে থাকা বিভিন্ন বেসরকারি ল্যাবরেটরির এজেন্টরা তাদের গিয়ে ধরে ফেলছে। বিভিন্ন রকম ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বাইরের ল্যাবরেটরীতে নমুনা পরীক্ষার জন্য। শুক্রবার দুপুরে হাতেনাতে ধরা হলো দুই যুবককে। তুলে নিয়ে গেল কোতোয়ালি থানার পুলিশ।
আগে থেকেই সংবাদমাধ্যম ও পুলিশ ওত পেতে অপেক্ষা করছিল নিজেদের একটি সূত্র মারফত খবর পেয়ে। এরপর দুই যুবক দেখা যায় মেদিনীপুর হাসপাতাল চত্বরে একটি জায়গায় আউটডোর থেকে বের হওয়ার রোগীদের বিভিন্ন রকম বোঝাচ্ছে। জানা গেল, ওই রোগীরা সদ্য আউটডোরের চিকিৎসকের কাছে নিজেদের সমস্যা শুনিয়ে ঔষধ প্রেসক্রাইব করিয়ে ছিলেন। বিভিন্ন লোকের রক্ত বা বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করানোরও পরামর্শ দিয়েছেন সরকারি চিকিৎসক সেখানে। কিন্তু সেই পরীক্ষা করানোর কথা মেদিনীপুর হাসপাতালেরই নির্দিষ্ট ল্যাবরেটরীতে। বাইরে থেকে আসা বেসরকারি ল্যাবরেটরি লোকজন ঐ সমস্ত রোগীদের বোঝাচ্ছিল-হাসপাতালে পরীক্ষার গুণমান খারাপ। তাই কম পয়সায় বাইরে থেকে পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো।-এমন বিভিন্ন রকম প্ররোচনা দেওয়া চলছিল তাদের। এরপরেই দূর থেকে লক্ষ্য করা পুলিশকর্মী ও সংবাদ মাধ্যম তাদের ঘিরে ফেলে হঠাৎ। পালানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে যায়। তাদের আটকে ওই দুই যুবককে ব্যাগ পরীক্ষা করতে বেরিয়ে আসে রক্তের নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন উপকরণ। পুলিশের চাপে সবটা স্বীকার করে তারা।
বেশ কিছুদিন ধরে এই দালাল চক্র সক্রিয় হচ্ছিল মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। অনেকের এমন দাবিও ছিল-মেদিনীপুর হাসপাতালে আসা রোগীদের আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করছে বিভিন্ন দালালেরা। তাদের রক্ত পরীক্ষা করতে বলা হলে হাসপাতালে না করিয়ে ওই নার্সিংহোম বা বিভিন্ন কোম্পানির ল্যাবরেটরী গুলিতে বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এতে সাধারণ গরিব মানুষেরা সর্বস্বান্ত হচ্ছিলেন। তারপরেই পুলিশের পদক্ষেপ।
ধৃত ২ যুবকের কাছে বেসরকারি ল্যাবরেটরির বিভিন্ন রকম সামগ্রী পেয়ে তাদের আটক করে তুলে নিয়ে যায় কোতোয়ালি থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে আগত রোগীদের বিভিন্নভাবে সচেতন করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct