সারিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: গত শনিবার একটি পুজো মণ্ডপের লাইট বোর্ডে বিতর্কিত মন্তব্য থাকায় দু পক্ষের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদে বেলডাঙ্গা। ঘটনার জেরে মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে বন্ধ রাখা হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। শনিবার সকাল পর্যন্ত তা বহাল থাকার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ইন্টারনেট বন্ধের সময়সীমা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছে সকলেই। ভগবানগোলার এক বাসিন্দা বলেন, ‘শিলিগুড়ি থেকে বাড়ি ফিরেছিলাম ব্যাংকের সমস্যার সমাধানের জন্য। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাংকের সমস্যা সমাধান হওয়ার আগেই ফিরে যেতে হচ্ছে।’ ই-কমার্সের ডেলিভারি কাজে যুক্তদের বক্তব্য, ‘ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় এক সপ্তাহ ধরে কাজ করতে পারছি না। আমরা দিন আনি দিন খাই, কাজ না হলে চলবে কিভাবে?’ অন্যদিকে সাইবার ক্যাফের বিভিন্ন দোকানে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় মোবাইল রিচার্জ অথবা অন্যান্য পরিষেবা ব্যাহত। ব্যাংকের শাখা গুলিতে কাজ না হওয়াই ঘুরে যেতে হচ্ছে গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের।
অন্যদিকে, উত্তেজনা কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বেলডাঙ্গা। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে মাঝেমধ্যে কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে।’ শুক্রবার পর্যন্ত বেলডাঙ্গা, রেজিনগর এবং শক্তিপুর থানা এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি ছিল। বেলডাঙ্গার বিভিন্ন স্কুল কলেজগুলি খোলা হয়। নেওয়া হয় টেস্ট পরীক্ষা। রেল স্টেশনেও সাধারণ মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত।
শুক্রবার জুমার নামাজে জেলার বিভিন্ন মসজিদে হিংসা পরিত্যাগ করে শান্ত থাকার আহ্বান জানান ইমামরা। এ বিষয়ে অল ইন্ডিয়া ইমাম মুয়াজ্জিন অ্যান্ড সোশাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বেলডাঙ্গার বেগুনবাড়ি মসজিদে আমি জুমার নামাজ পড়িয়েছি। সেখানে তো বটেই পাশাপাশি বেলডাঙ্গার আড়াইশো মসজিদ সহ জেলার কয়েক হাজার মসজিদে মানুষকে হিংসা পরিত্যাগ করে শান্তির বাতাবরণ তৈরীর আহ্বান জানানো হয়েছে ইমামদের তরফ থেকে। আমরা বলেছি, প্রশাসনের উপর ভরসা রাখুন। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।’
সবমিলিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বেলডাঙ্গা সহ জেলার অন্যান্য জায়গা। তবে ইন্টারনেট কবে খুলবে, সেই অপেক্ষায় মুর্শিদাবাদ জেলা।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct