সাবের আলি, বড়ঞা, আপনজন: ছেলের ঋণ শোধ দিতে বাধ্য করা হচ্ছিল বাবাকে। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতি হলেন বাবা। বৃহস্পতিবার সকালের ওই ঘটনা বড়ঞা থানার বদুয়া গ্রামের। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম জমিরউদ্দিন শেখ(৬৯)। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এই ঘটনায় পুলিস একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে মৃতের বাড়ির কিছুটা দূরেই একটি গাছে বৃদ্ধের ঝুলন্ত দেহ তে পান বাসিন্দারা। পরে তাঁরা পুলিসে খবর দিলে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিস। তবে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য নেমে আসে। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠে, বেসরকারি সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণ শোক করতে না পারায় বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেছেন। মৃতের স্ত্রী সেলিনা বিবি বলেন, আমার স্বামী নয়। ঋণ নিয়েছিল আমার ছেলে। কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার কাছে থেকে সাপ্তাহিক পরিশোধে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিল। এরপর কয়েকটা কিস্তিও দিয়েছিল। এরপর ঋণের চাপে ছেলে খোন থেকে চলে গিয়েছে মুম্বাইয়ে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিনমাস আগে মৃতের ছেলে সেলিম শেখ স্ত্রী সহ তিন কন্যা সন্তানকে নিয়ে মুম্বাই চলে যায়। সেই চাপ পড়ে যুবকের বাবার উপর। অভিযোগ, ঋণ পরিশোধের জন্য প্রতিদিন সন্ধ্যায় মৃত বৃদ্ধকে চাপ দিত সংস্থার কর্মিরা। এমনকি বাড়ি বিক্রি করেও ঋণ পরিশোধ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এরফলে আতঙ্কে ও লজ্জায় মুখ রাখা দায় হয়ে পড়ে বৃদ্ধের।
এরপর এদিন সকালে বৃদ্ধর দেহ উদ্ধার করে পুলিস।
মৃতের দাদা হিরণ শেখ বলেন, ঋণ আদায়কারিরা প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাইয়ের বাড়িতে এসে বসে থাকত। বিভিন্নভাজবে ভয় দেখান হত ভাইকে। এমনকি ভাই একমাত্র সম্বল বাড়িটিও বিক্রি করতে উদ্যোত হয়েছিল। ভাইকে আমার বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার কথাও দিয়েছিলাম। কিন্তু এরপর সব শেষ হয়ে গেল।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলেও কয়েকজন ঋণ আদায়কারি মৃতের বাড়িতে এসে বসেছিলেন। তাঁরা রীতিমত বৃদ্ধকে চাপ দিতে থাকে। ঋণ শোধ না করলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেয়। যদিও সংস্থার কর্মিরা এনিয়ে মুখ খুলতে চাননি। বড়ঞা থানার পুলিস জানিয়েছে, মৃত্যুর ঘশটনায় এখনও কোন অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct