আপনজন ডেস্ক: ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বিরোধী সদস্যদের দাবির মধ্যে বৃহস্পতিবার জেপিসি চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল বলেছেন, তাদের রিপোর্ট প্রস্তুত রয়েছে এবং তারা এ বিষয়ে ক্লজ-বাই-ক্লজ আলোচনা করবেন।
জগদম্বিকা পাল বলেন, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এই বিলটি জেপিসিতে পাঠিয়েছেন, তাই তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন তারাও তাই করবে।
জেপিসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের রিপোর্ট প্রস্তুত এবং আমরা এটি নিয়ে ক্লজ-বাই-ক্লজ আলোচনা করব। এখানকার বিরোধীরাও এটা বলছিল (জেপিসির মেয়াদ বাড়ানোর দাবিতে) যে কোনও সদস্য বা বিরোধী দল স্পিকারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। ওরা (বিরোধীরা) জেপিসির মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। স্পিকার এই বিলটি আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন, তাই তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরাও তাই করব।
জেপিসি চেয়ারম্যান জানান, বৃহস্পতিবার সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের সঙ্গে প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ ওয়াকফের জেপিসি-র বৈঠকে আমরা সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রককে ডেকেছিলাম। ৬ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তারা ক্লজ বাই ক্লজ আলোচনা করেন। এর আগেও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রক বৈঠক করেছে। পাঁচটি বৈঠকে এই সংশোধনী নিয়ে ২৯ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা হয়েছে, যেখানে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল তাঁদের সমস্যা শুনতে রাজি নন এবং কমিটির রিপোর্ট সংসদে পেশ করার জন্য তাড়াহুড়ো করছেন বলে অভিযোগ করে কয়েকজন বিরোধী সাংসদ স্পিকার ওম বিড়লার কাছে গিয়ে যৌথ কমিটির সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। সূত্রের খবর, সোমবার বিড়লার সঙ্গে দেখা করে মেয়াদ বাড়ানোর দাবি তুলতে পারেন সমস্ত বিরোধী সাংসদরা।
জগদম্বিকা পাল স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে কমিটির রিপোর্ট প্রস্তুত এবং তিনি সময়মতো সংসদে এটি পেশ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংসদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী, শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিনে কমিটিকে তার রিপোর্ট জমা দিতে হয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার জগদম্বিকা পাল জানিয়েছেন যে কমিটির রিপোর্ট প্রস্তুত এবং তারা সময়মতো এটি হাউসে জমা দেবেন।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবন এনেক্সে জাপার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাপস পাল বলেন, ‘এটাই শেষ বৈঠক নয়। সদস্যদের উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর পেলে প্রস্তাবিত সংশোধনীর বিষয়ে তাদের মতামত নেওয়া হবে এবং একটি ঐকমত্য গঠন করা হবে। আমাদের প্রতিবেদন প্রস্তুত রয়েছে এবং কমিটি সময়মতো প্রতিবেদন জমা দেবে।
২৫ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহের শেষের দিকে জেপিসি কমিটি এই বিলের উপর তাদের প্রতিবেদন হাউসে উপস্থাপন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। জেপিসির প্রচেষ্টা ওয়াকফ আইনের সংস্কার এবং সম্প্রদায়ের বৃহত্তর কল্যাণে ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য একটি বৃহত্তর জাতীয় উদ্যোগের অংশ।
চলতি বছরের ২২ আগস্ট থেকে ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ২০২৪ নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি ২৫টি বৈঠক করেছে। জেপিসি ছয়টি মন্ত্রণালয়ের কাজ পর্যালোচনা করেছে এবং প্রায় ১৯৫টি সংস্থা আসতে চেয়েছিল তবে সারা দেশে ১৪৬ টি শোনা গেছে। এছাড়াও ওয়াকফ বিল নিয়ে সচিবালয় থেকে প্রায় ৯৫ লাখ ৮৬ হাজার পরামর্শ পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি ওয়াকফ আইন, ১৯৯৫ দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও দখলদারিত্বের অভিযোগ রয়েছে।
প্রস্তাবিত ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪ -এ যেসব প্রস্তাব রাখা হয়েছে তার মধ্যে হল ওয়াকফ বোর্ডে হিন্দু প্রতিনিধি নিয়োগ করতে হবে, ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তির দেখভালে থাকবেন জেলা কালেক্টর, কেউ ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হলে পাঁচ বছরের আগে ওয়াকফ করতে পারবে না প্রভৃতি। এ নিয়ে ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য এবং সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে ইনপুট সংগ্রহের জন্য একাধিক বৈঠক করছে জেপিসি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct