আপনজন ডেস্ক: কৃষকদের জন্য বড় সুখবরের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে এবার বিরাট অর্থ বরাদ্দ করা হল। বৃহস্পতিবার নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী কৃষকদের সহায়তায় বিপুল অর্থ বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেন। এদিনই মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়, কৃষি বিপননমন্ত্রী বেচারাম মান্না, পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক করেন। মুখ্যমন্ত্রী সাঙবাদিক সম্মেলনে জানান, ২০২৪-২০২৫ রবি মরশুমের জন্য কৃষকবন্ধু নতুন প্রকল্পে ১ কোটি ৮ লক্ষ ৯৫ হাজার কৃষককে মোট ২ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা সহায়তা প্রদানের সূচনা করা হল। তাদের এই অর্থ শুক্রবার থেকে তাদের নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চলতি বছরেই শুধুমাত্র কৃষকবন্ধু নতুন প্রকল্পে বাংলার কৃষকদের মোট ৫ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা সহয়তা দেওয়া হল।’ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘২০১৯ সাল থেকে বাংলার কৃষক, বর্গাদার, ভাগচাষীদের ২১ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া হল। রাজ্যের টাকা, কেন্দ্রের ১ পয়সা নেই।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে কৃষকদের ফলের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী অর্থ বরাদ্দের কথা জানান। মুখ্যমন্ত্রী শস্য বিমার আওতায় তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। ২০১৯ সাল থেকেই এই ধরনের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে আছে রাজ্য সরকার। এ সম্পর্কে মমতা বলেন, শস্য বীমা প্রকল্পে ১ কোটি ২ লক্ষ কৃষককে আরও ৩ হাজার ২২১ কোটি টাকা সহায়তা করা হয়েছে। বন্যা, দানার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বাংলার শস্য বীমা করার সময় নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকে। রাজ্যে ক্যাম্পও করা হয়েছে। প্রায় ৬৫ লক্ষ কৃষক নাম লিখিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার এব্যাপারে ইঙ্গিত মিলেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর এক পোস্ট থেকে। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছিলেন, আমরা ১৯৭ কোটি টাকা ছাড়ছি। ২ লাখ ৪৬ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক যারা বৃষ্টির ঘাটতির জন্য ধান বুনতে পারেননি তাদের সহায়তা করবে সরকার। এটা বাংলা শস্য বিমার আওতায় দেওয়া হবে।
অন্য দিকে, আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে এদিন ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলার আলু ভিন রাজ্যে বিক্রি করে দেওয়ার ফলে আলুর দাম ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এই রাজ্যে। তাই মুখ্যমন্ত্রী বলেন,‘বাংলার আলু বাইরে চলে যাওয়ার ফলে বাংলার আলুর দাম বাড়িয়ে মুনাফা বৃদ্ধি করা চলবে না। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আমার নিজের রাজ্যের মানুষ খেয়ে যদি তারপর থাকে তাহলে বিক্রি করো।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শস্য বিমার টাকা পাবেন কৃষকরা, আর তারপরেও আলু ভিন রাজ্যে চলে যাবে এটা হতে পারে না। তবে, শুক্রবার থেকে কৃষক বন্ধু প্রকল্পে কৃষকদের অ্যাকেউন্টে টাকা পাঠানোর খবরে রাজ্যের চাষি মহলে খুশির জোয়ার বলে জানা যাচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct