আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হাতে বন্দি থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে ইসরায়েলে বিক্ষোভ করেছেন জিম্মিদের আত্মীয়-পরিজনসহ হাজার হাজার মানুষ। শনিবার দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিব, বন্দরনগর হাইফা, কারকুরসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো। মিছিলে অংশ নেয়া এক জিম্মির আত্মীয় ইসরায়েলের দৈনিক ইয়েদিওথ আহরনোথকে বলেন, ‘যে সরকার তার নাগরিকদের হামাসের সুড়ঙ্গে মরার জন্য পাঠায়, তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। এখন যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে, কিন্তু আমাদের নাগরিকরা যেখানে হামাসের সুড়ঙ্গগুলোতে মৃত্যুর মুখে রয়েছে, তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে যুদ্ধবিরতি সম্ভব? তারা (সরকার) এখন জিম্মিদের কথা ভুলে গেছে এবং নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য বিভিন্ন অজুহাত দিচ্ছে।’ সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদ মিছিল ইস্যুতে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা, সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। আইডিএফের অভিযোনে গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ, আহত হয়েছেন আরো লক্ষাধিক। এই সংঘাতের শুরু থেকে মধ্যস্থতার ভূমিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। এই তিন দেশের কূটনৈতিক তৎপরতায় গত বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে এক অস্থায়ী বিরতিতে ১০৭ জন জিম্মি মুক্তি পেয়েছেন। তবে তারপর থেকে এখন পর্যন্ত অল্প কয়েকজন ব্যতীত আর কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র অভিযানে হাজার হাজার ফিলিস্তিনির পাশাপাশি অন্তত ৩০ জন জিম্মি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে অবশিষ্ট সব জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কিছুতেই গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের পক্ষে নন। ফলে জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারটিও ঝুলে আছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct