আপনজন ডেস্ক: ২০২২ বিশ্বকাপের পর থেকে নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম বাজে সময় পার করছে ব্রাজিলের ফুটবল। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়ের পরপরই ব্রাজিলের কোচের পদ ছাড়েন তিতে। এরপর নতুন কোচের জন্য লম্বা সময় অপেক্ষায় থাকতে হয় ব্রাজিলকে।
সেলেসাওদের প্রত্যাশা ছিল অন্তবর্তীকালীন কোচ ফার্নান্দো দিনিজকে দিয়ে কাজ চালিয়ে নিয়ে কোপা আমেরিকার আগে কার্লো আনচেলত্তিকে নিয়োগ দেবে। পাকা কথাও নাকি সেরে ফেলেছিল দুই পক্ষ। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) অভ্যন্তরীণ সংকটের জেরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন আনচেলত্তি এবং রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গেই চুক্তি নবায়ন করেন। সে সময় অনেকটা আকস্মিকভাবে দৃশ্যপটে আসেন দরিভাল জুনিয়র। শুরুটা ইতিবাচক হলেও দ্রুতই ধারাবাহিকতা হারায় দরিভালের দল। কোপা আমেরিকা ব্যর্থতার পাশাপাশি বিশ্বকাপ বাছাইয়েও বেশ ধুঁকতে দেখা যাচ্ছে দলটিকে। একপর্যায়ে পয়েন্ট তালিকার ছয় নম্বরেও নেমে যায় ব্রাজিল।
সর্বশেষ ভেনেজুয়েলার সঙ্গেও ব্রাজিল ড্র করেছে ১–১ গোলে। এমন পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোয় ব্রাজিল আদৌ নিজেদের খুঁজে পাবে কি না, তা নিয়েও আছে সংশয়। আর ব্রাজিল দল যখন নানা সমস্যায় জর্জর, তখনই সামনে এসেছে নতুন এক খবর। ২০২৬ সালে আমূল বদলে যেতে পারে ব্রাজিল দল। শুধু কোচের পদেই নয়, বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে সিবিএফের ভেতরেও। সংবাদমাধ্যম স্পোর্ত জানিয়েছে, ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও নিজেই নাকি সিবিএফের সভাপতি হতে চান। পাশাপাশি তিনি কোচ হিসেবে দলে আনতে চান ইউরোপের প্রভাবশালী কোচ পেপ গার্দিওলাকে। রোনালদো সম্প্রতি ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ক্রুজেইরো মালিকানা ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁর ছেড়ে দেওয়ার শেয়ার কিনেছে ব্যবসায়ী পেদ্রো লোরেন। এখন ‘দ্য ফেনোমেনন’খ্যাত রোনালদোর চোখ নাকি আরও বড় কিছুর দিকে। আগামী বছর সিবিএফের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান তিনি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট এনদালদো রদ্রিগেজের মেয়াদ ২০২৬ সালের মার্চে শেষ হলেও সিবিএফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছর। ধারণা করা হচ্ছে, রদ্রিগেজ আবারও নির্বাচনে দাঁড়াবেন। তবে রোনালদোও যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের লড়াইয়ে আসেন, তাহলে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হতে পারে রদ্রিগেজকে। স্পোর্তের মতে, রোনালদো তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনের সময় থেকেই ব্যবসা ও সামাজিক–রাজনৈতিক দুনিয়ায় নিজের নেটওয়ার্ক তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এমনকি বিচারিক ক্ষেত্রেও নাকি তাঁর ভালো যোগাযোগ আছে, যা নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁর পক্ষে কাজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে আলাদা দ্যুতির বিষয়টি তো রয়েছেই। এর আগে ২০১২ সালে সিবিএফের সভাপতি হতে চাওয়ার কথা বলেছিলেন রোনালদো। আর এখন সিবিএফের সভাপতি হলে তাঁর প্রধান লক্ষ্য ব্রাজিলের কোচ হিসেবে পেপ গার্দিওলাকে নিয়ে আসা। ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে গার্দিওলার চুক্তির মেয়াদ এ মৌসুমের পরই শেষ হয়ে যাবে। বতর্মানে সিটির নড়বড়ে পারফরম্যান্সসহ নানা কারণে সিটির সঙ্গে গার্দিওলার চুক্তি নবায়ন নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
এর মধ্যে গার্দিওলাও একাধিকবার জাতীয় দলের কোচ হওয়ার ইচ্ছার কথা বলেছিলেন। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চান রোনালদো। স্প্যানিশ কিংবদন্তিকে নিয়ে আসতে চান ব্রাজিলে। এখন শেষ পর্যন্ত রোনালদো এ ইচ্ছেগুলো পূরণ হয় কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct