আসিফা লস্কর, গঙ্গাসাগর, আপনজন: অপেক্ষা আর মাত্র কয়েকটি মাসের কয়েক মাস পরে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা ২০২৫। গঙ্গাসাগর মেলাতে মাথায় রেখে দফায় দফায় চলছে প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠক। গঙ্গাসাগর মেলাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক বৈঠক চলছে কম বেশি প্রতিটি সপ্তাহে। কিভাবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঙ্গাসাগর মেলাতে সুষ্ঠুভাবে ও নিরাপদ ভাবে সুসম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে বিশেষ লক্ষ্য দেয়া হয়েছে। প্রতিবছরই গঙ্গাসাগর মেলার আগে ভেসেল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে মুড়িগঙ্গা নদীতে চলে ড্রেজিং এর কাজ। সেই কাজও ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে। মুড়িগঙ্গা নদী অতিরিক্ত কলি এবছর জেলা প্রশাসনের কপালে ফেলেছে চিন্তার ভাঁজ। মুড়িগঙ্গা নদীতে অতিরিক্ত পলি জমায় দুর্ভোগ চরমে উঠেছে সাগরদ্বীপের এলাকাবাসীদের। প্রতিদিন ভাটার সময় গড়ে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা বন্ধ রাখতে হচ্ছে ভেসেল পরিষেবা। দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বেশীরভাগ সময় ভেসেল পরিষেবা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা জেটিঘাটে অপেক্ষা করতে হচ্ছে পুণ্যার্থী থেকে সাগরদ্বীপের বাসিন্দাদের। নিরুপায় হয়ে লট নং আট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার নদীর বাঁধ ও পলি-কাদা মাড়িয়ে মাঝ নদীতে গিয়ে ট্রলার কিংবা ইঞ্জিন চালিত বোট ধরে পারাপার হতে হচ্ছে। ইঞ্জিন চালিত বোটে পারাপার বিপদ জেনেও মানুষ সময় বাঁচাতে বেঝে নিচ্ছে ঝুঁকির পারাপার। বছরের ১১ মাস এই ছবি ধরা পড়বে কাকদ্বীপের লট নং আট থেকে সাগরের কচুবেড়িয়ার মধ্যে। সাগরমেলার জন্য প্রতিবছর নদীতে সাময়িক ড্রেজিং করা হয়। মাসখানেক স্বাভাবিক থাকে ভেসেল পরিষেবা, পরে একই দুর্ভোগ চলতে থাকে। চলতি বছরে সাগরমেলার জন্য ড্রেজিংয়ের সরঞ্জাম এসে গেলেও কাজ শুরু হয়নি এখনও। এই দুর্ভোগ কমাতে সাগরদ্বীপের বাসিন্দাদের দাবি মুড়িগঙ্গা নদীর ওপর কংক্রিটের সেতু। কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েনের পর অবশেষে সেতু তৈরীর ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে সেতুর জন্য জমি চিহ্নিতকরণ ও সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু সাগরদ্বীপের বাসিন্দাদের দাবি কবে বাস্তবে রুপ নেবে সেই সেতু সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে সাগরদ্বীপের বাসিন্দারা। উত্তম মন্ডল নামে এক নিত্যযাত্রী তিনি জানান, মুড়িগঙ্গা নদীতে চড় পড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের এমন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিপদ যেন ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত করতে হয় আমাদের। প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার কাদা ঘেঁটে আমাদের ইঞ্জিন চালিত বোটে উঠতে হয় ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার করতে হয়। প্রতিদিনই মুড়িগঙ্গা নদীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না থাকার কারণে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা বন্ধ থাকে ভেসেল পরিষেবা। এর ফলে সঠিক সময় আমরা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারিনা। সব থেকে বেশি সমস্যার মধ্যে পড়ে বয়স্ক থেকে শুরু করে রোগীরা। কাদার মধ্যে তাদেরকে চলাচল করতে সমস্যা হয়। রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুড়িগঙ্গা নদীর উপর ব্রিজ তৈরি অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কবে এই সমস্যা মিটবে তা আমরা জানিনা। রাজ্যের সেচ দপ্তরের মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া বলেন, গঙ্গাসাগর মেলাতে মাথায় রেখে আমরা ইতিমধ্যেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মুড়িগঙ্গা নদীতে পলি সরানোর কাজ শুরু করে দিয়েছি। ড্রেজিং এর মাধ্যমে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ড্রেজিং এর কাজ চলছে। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই আমরা করতে পারি না পলি জমছে বলে ড্রেজিং এর কাজ করা হচ্ছে। রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী রয়েছে খুব দ্রুতই ব্রিজ তৈরি হবে মানুষ এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct