সুভাষ চন্দ্র দাশ , ক্যানিং, আপনজন: প্রকৃত পক্ষে শীতের শুরু ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারী। শীত পড়লেই নানান ধরনের খাবার খাওয়া ও ভ্রমণের বাসনা জেগে ওঠে প্রতি বাঙালীর ঘরে ঘরে।তাই শীত শুরু হতেই রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বিখ্যাত “জয়নগরের মোয়া” র বিজ্ঞাপন নজরে পড়ে। জয়নগরের বিখ্যাত সেই মোয়া তৈরী হয় জয়নগর লাগোয়া বহড়ু তে। একদিকে নলেন গুড়ের স্বাদ আর অন্যদিকে সম্মান। এই দুয়ের উপর ভরসা করে রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে “জয়নগরের মোয়ার ” ঐতিহ্য।
খেজুর গাছের রস ফুটিয়ে তৈরী করা হয়। শীতের শুরুতেই গ্রামের শিউলিরা বিভিন্ন খেজুর গাছ পরিষ্কার করে প্রথম খেজুর রস সংগ্রহ করে তারপর আগুনে ফুটিয়ে নলেন গুড় তৈরী করেন। সুগন্ধ যুক্ত সুস্বাদু এই নলেন গুড় আর সুগন্ধ কনকচূড় ধানের খই সহ অন্যন্য উপাদান দিয়ে তৈরী হয় জয়নগরের মোয়া। শীতের সময় পিঠে,পুলি,পায়েস,পাটালী,সন্দেশ,রসগোল্লা সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নলেন গুড়ের অপরিসীম চাহিদা। তাই শীতের আবহ শুরু হতেই দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বিভিন্ন প্রান্তের শিউলিরা বেরিয়ে পড়েন খেজুর গাছের সন্ধানে। জয়নগরের বহড়ু এলাকার প্রবীণ শিউলী অনন্ত সরদার জানান “বর্তমানে দেশ সহ দেশের বাইরেও নলেন গুড় এবং জয়নগরের মোয়ার ঐতিহ্যের কদর রয়েছে ব্যাপক হারে। সেই তুলনায় খেজুর গাছের সংখ্যা খুবই কম। তিনি আরো বলেন এই ঐতিহ্য বাংলাকে ধরে রাখতে হলে অবশ্যই খেজুর গাছ লাগিয়ে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন না হলে অচিরে নলেন গুড়ের প্রকৃত স্বাদ হারিয়ে যাবে”।
অন্যদিকে শীতের শুরুতেই সূদুর মেদনীপুর জেলার বেশকিছু শিউলি ক্যানিং,জয়নগর,বারুইপুর,গোসাবা,বাসন্তী,জীবনতলা এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছেন খেঁজুর গাছের রস সংগ্রহের জন্য।শিউলিদের দাবী ঠান্ডা ঠিকঠাক না পড়লে রসের জোগানে ভাটা পড়বে।আমরা চাই শীতের মরশুমে সঠিক মাত্রায় শীত পড়লে খেজুর রস সংগ্রহে কোন অসুবিধা হবে না।
অন্যদিকে কুলতলির এক শিউলি দুলাল দাস জানিয়েছেন,শীতের আবহ শুরু হয়েছে।আর সেই কারণে খেজুরগাছ পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছি।কারণ সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে পরিচর্যা না করলে খেজুর রস পাওয়া যাবেনা। তবে চলতি বছর যা আবহাওয়া রয়েছে তাতে করে শীত ভালোরকম পড়বে। আর শীত যত বেশী হবে তত বেশি খেজুর রস উৎপাদন হবে। ’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct