আপনজন ডেস্ক: আজারবাইজানে শুরু হয়েছে জাতিসংঘের ২৯তম জলবায়ু সম্মেলন (COP29) যেখানে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নের পরিমাণ বৃদ্ধির দাবি কেন্দ্র করে আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।প্রতি বছর এই সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশ অংশগ্রহণ করে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিপরীতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
এবারের সম্মেলনটি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে শুরু হয়েছে।দুই সপ্তাহব্যাপী এই ফোরামে,অংশগ্রহণকারী দেশগুলো একটি নতুন বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়ন লক্ষ্য নির্ধারণে মনোযোগ দিচ্ছে।বিশ্বের অনেক অঞ্চলে ঘটে যাওয়া নানা জলবায়ু দুর্যোগের পর,উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের জন্য প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধির দাবি জোরালো করেছে।
তাছাড়া, সম্মেলনের উপর যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাবও ছায়া ফেলেছে,কারণ তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কার্বন নির্গমন হ্রাসের প্রতিশ্রুতিতে পরিবর্তন আনার হুমকি দিয়েছেন।
জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক প্রধান সাইমন স্টিয়েল তার উদ্বোধনী ভাষণে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন,যাতে তারা প্রমাণ করেন যে বৈশ্বিক সহযোগিতা এখনও কার্যকর রয়েছে।তিনি বলেন, “বাকুতে আমাদের একটি নতুন বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়ন লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।
যদি বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ দেশ দ্রুত কার্বন নির্গমন কমাতে সক্ষম না হয়, তবে সবাইকে এর জন্য বড় মূল্য দিতে হবে।”আলোচনার শুরুতেই বক্তব্যে আজারবাইজানের পরিবেশ মন্ত্রী এবং জলবায়ু সম্মেলন (COP29)-এর সভাপতি মুখতার বাবায়েভ বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তন ইতিমধ্যে আমাদের উপর প্রভাব ফেলছে।” তিনি জানান, COP29 একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়,যেখানে সবাই মিলে এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করতে সক্ষম হব।
বিগত বছরগুলোর গরম আবহাওয়ার রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার ফলে ২০২৪-এর বার্তাও সম্মেলনটির গুরুত্ব বাড়িয়েছে। আল-জাজিরার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে,জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি দামিলোলা ওগুনবিই বলেন,তার অন্যতম প্রত্যাশা হলো জলবায়ু অর্থায়নের ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করা।বর্তমানে শুধুমাত্র ১৫ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তি বিনিয়োগ গ্লোবাল সাউথে যায়।
প্রসঙ্গত,ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন আলোচনার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে,কারণ তার প্রশাসন প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান ঘটানোর সম্ভাবনা তৈরি করেছে।এতে অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মানসিকতা কমে যেতে পারে।
আয়োজক দেশ হিসেবে আজারবাইজানের সামনে বড় দায়িত্ব হলো অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে একটি নতুন বৈশ্বিক অর্থায়ন লক্ষ্যে সম্মত করা।উন্নয়নশীল দেশগুলো ও চীনের মতো দেশগুলো এই বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পদক্ষেপ তাদের দৃঢ়তাকে নাড়া দিতে পারবে না বলে তারা মনে করছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্ববাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।জলবায়ু সম্মেলন (COP29)-এর মাধ্যমে একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক অর্থায়ন কাঠামো প্রণয়ন করে সবার জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়া এখন সময়ের দাবি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct