সাবের আলি, বড়ঞা, আপনজন: স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভাবের তাড়নায় মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে কাজে গিয়েছিলেন ওই গ্রামের জামিরুল শেখ(৩২)। সেখানে তিনি রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সেখানে একটি বাড়ি তৈরির সময় জলের চেম্বার থেকে জল তোলা হচ্ছিল। হঠাৎই অসাবধানতাবশত হুড়মুড়ি করে জলের চেম্বার এর মধ্যে পড়ে গেলে জখম হন। এরপর সহকর্মীরা দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁকে। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। মহারাষ্ট্রের মুম্বাই থেকে সেই মৃত্যু সংবাদ এসে পৌঁছেছে বড়ঞা থানার বেলডাঙা গ্রামে। মৃত্যু সংবাদ পেয়ে শোকগ্রস্থ গোটা পরিবার। মৃতের তিনটি নাবালক সন্তান রয়েছে। পরিবারের হাল ধরার মত আর কেউ নেই । মৃতের স্ত্রী পিঙ্কি বিবি বলেন, চার মাস আগে কাজে গিয়েছিলো । বৃহস্পতিবার আমাদের কাছে খবর আসে জলের চেম্বারে পড়ে মারা গেছে। আমি এখন কি করব? আমার তিনটে নাবালক সন্তান ছাড়াও দুই বৃদ্ধ বৃদ্ধা শশুর শাশুড়ি সহ মোট ছয়জন পরিবারে। উনি একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। কিভাবে আমি এই নাবাল সন্তানদের খাওয়া-দাওয়া থেকে পড়াশোনা করাবো ভেবে পাচ্ছিনা।
মৃতার মা সিদ্দিকা বেগম বলেন, ছেলে আর এই পৃথিবীতে নেই। আমরা কিভাবে বেঁচে থাকব বুঝতে পারছি না। আমাদের সংসারে হাল ধরার মতো কেউ নেই। তাই সরকারের কাছে সাহায্য চাইছি। একটু সাহায্য পেলে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতাম। না, হলে আমাদের অনাহারেই মৃত্যুবরণ করতে হবে।
মৃতার বাবা জাহিরুল শেখ বলেন, চার মাস আগে ছেলে মহারাষ্ট্রের মুম্বাই রাজমিস্ত্রি কাজে গিয়েছিল। হঠাৎ শুনি ছিলে জলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। এই সংসারে সেই একমাত্র উপার্জনকারী ছিল। কিভাবে আমাদের সংসার চলবে এক কাঠা জমি জায়গাও নেই।
প্রতিবেশিরা জানান, ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলো ওই যুবক পরিবারের হাল ফেরানোর জন্য। কিন্তু তাঁর আর বাড়ি ফেরা হল না। বদলে বাড়িতে পৌঁছল নিথর দেহ। শুক্রবার নিথর দেহ এসে পৌঁছয় বড়ঞা থানার বেলডাঙ্গা ফরাজীপাড়া গ্রামে। মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রতিবেশী থেকে পরিবারের লোকজন। জামিরুল শেখ এর মৃত্যুতে বেলডাঙা গ্রামের শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct