সাবের আলি , খড়গ্রাম, আপনজন: মাটির ভাঙা দেওয়ালের উপর ত্রিপল চাপা দেওয়া। তারমধ্যেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রাতবাস করতে হয় বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার। ওদের পেশা কার্যত ভিক্ষাবৃত্তি। পঞ্চায়েতে বহুবার আবেদন করেও মেলেনি রাজ্য সরকারের কোনও প্রকল্পের সুবিধা। সব কিছু থেকেই বঞ্চিত উনারা। ঘটনা খড়গ্রাম ব্লকের ভালকুন্দি গ্রামের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের শেষপ্রান্তে মাঠের দিকে তেনু শেখ ও আনজেরা বিবির বাড়ি। বাড়ি বলতে দুটি মাটির ভাঙা দেওয়ালের উপর টিন ও ত্রিপল চাপা দেওয়া। সেখানেই কোনমতে দিনরাত কাটান তাঁরা। উভয়ের বয়স ৬০ পিরিয়ে গিয়েছে। স্বামী ও স্ত্রীর কর্মক্ষমতাও হারিয়ে গিয়েছে। এরমধ্যে আনজেরা বিবি শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাই প্রতিবেশিদের পাঠান খাবার খেয়েই দিন যাপন করতে হয় তাঁদের। এমন ঘটনা প্রায় ২৪ বছর ধরে চলে আসছে। তেনু শেখ বলেন, ২০০০ সালের বন্যায় আমার বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। এরপর আর বাড়ি তৈরি করতে পারিনি। বহুবার পঞ্চায়েতে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু বাড়ি পেলাম না। আম হাঁপানি রোগী। তাই খেটে খাওয়ার ক্ষমতাও নেই। প্রতিবেশিরা যা খেতে দেই তাই খেয়েই আমরা বেঁচে রয়েছি।
প্রতিবেশিরা জানান, ওই দম্পত্তির চারটি .ছেলে থাকলেও কেউ এখানে থাকেন না। নিজেদের সংসার গোছাতে ছেলেরাও বাবা মাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। তাই প্রতিবেশিদের কাঁধেই এখন বৃদ্ধ দম্পত্তির ভার পড়েছে।আনজেরা বিবি বলেন, বহুবার গ্রামের মেম্বার থেকে প্রধানকে সমস্যার কথা জানিয়েছি। বারবার আবেদন করা হয়েছে। কোন সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা আমরা পাই না। ভালকুন্দী গ্রামের অধিকাংশ পরিবার দারিদ্র সীমা নিচে বসবাস করে তাদের প্রত্যেকেরই মাটির দেয়াল দেওয়া দুই চালা বাড়ি ওই গ্রামের অনেকেই সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেন আমরা বারবার স্থানীয় পঞ্চায়েতে গেলেই বলা হয় এবার হবে। এবার হবে। কবে হবে জানিনা। এই ভাঙাবাড়ির দেওগাল চাপা পড়েই হয়তো কোনদিন মরেই যাব। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান অর্পিতা বিশ্বাস বলেন, বিষয়টির খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে ওই দম্পত্তি পঞ্চায়েতে এসে যোগাযোগ করলে ভাল হয়। ওদের পাঠিয়ে দিন। বাড়ির বিষয়টি আমরা চেষ্টা করছি। তবে লক্ষী ভাণ্ডার করে দেওয়া যাবেই। ওই ওয়ার্ডের মেম্বার মতিউর রহমান ওরফে মিলন। বলেন এই পাড়ার বেশিভাগই মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন আমরা বিডিও কে সকলের জন্য বিষয়টা জানাবো। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন যাদের পাকা দোতলা বাড়ি আছে তারাই আবার ঘর পাচ্ছে। আমরা গরীব মানুষ আমাদের মাটির ঘর অথচ আমরা ঘর পাচ্ছি না। যদি খড়গ্রাম বিডিও নিজে এসে আমরা কি অবস্থায় বসো বাস করি যদি দেখে যেত তাহলে ভালো হতো বলে জানান। গ্রামবাসীরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct