আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বর্বর হামলা থামছেই না। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দখলদার দেশটির হামলায় আরো ৩১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৩ হাজার ৩০০ জন ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন আরো ৮৬ জন। এতে আহতের সংখ্যা গিয়ে পৌঁছেছে অন্তত এক লাখ ২ হাজার ১০৫ জনে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোববারের ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের মধ্যে অর্ধেকই গাজার উত্তরাঞ্চলের। এই অঞ্চলে হামাস পুনঃসংগঠিত হচ্ছে দাবি করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সেখানে নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, ইসরায়েলি সেনাদের নতুন আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু এখন বেইট লাহিয়া শহর এবং জাবালিয়ায় বাড়িগুলো। গত রাতের পৃথক হামলায় কমপক্ষে ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন সেখানে। বাকিরা গাজা শহরে এবং দক্ষিণাঞ্চলে পৃথক ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। কেবল খান ইউনিসে চার শিশুসহ ৮ জন নিহত হয়েছেন। রোববার বেইট লাহিয়ার কাছে কামাল আদওয়ান হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ইসরায়েলি ট্যাঙ্কের গোলায় গুরুতর এক শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিভিন্ন অবৈধ বসতিতে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। ওই সময় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে তারা। একই সঙ্গে প্রায় ২৫০ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে আসে। হামাসের এই হামলার প্রতিশোধ নিতে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচারে হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েল। যা এখনও অব্যাহত। বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে গাজায় অবস্থিত হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। অবরুদ্ধ ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct