সাবের আলি, বড়ঞা, আপনজন: দুই প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে চরম দারিদ্রতার সঙ্গে দিন কাটাচ্ছে বড়ঞা থানার কাটনা গ্রামের এক চাষি পরিবার। আর্থিক সঙ্কটের কারণে দুই সন্তানের চিকিৎসাও করতে পারছেন না পরিবারের লোকজন। তার উপর বাড়িতে বৃদ্ধা শাশুড়ি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। পরিবার তারও চিকিৎসা করতে পারছেন না। তাই অসহায় পরিবারের পক্ষ থেকে সাহায্যের আর্তি করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের নুর মহম্মদ পেশায় একজন দিনমজুর। সারাদিনে তাঁর রোজগারেই চলে ছয়জনের পেট। বাড়ি ঘর বলতেও মাটির পাঁচিল দেওয়া টিনের চালার এক কামড়া ঘর। তাতেই ছয়জনের বাস। ঘরের এক কোনে গত তিনবছর ধরে বিছানাগত অবস্থায় রয়েছেন নুর মহম্মদের মা। সামান্য জমিও নেই পরিবারটির। যেটুকু জমান টাকা ছিল তা দুই সন্তানের চিকিৎসা খরচেই চলে গিয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের চাঁদ মহম্মদ ১০ বছরের বড় ছেলে ও আট বছরের মেয়ে নাসরিন সুলতানা। দুইজনেরই জন্মের কয়েকমাস পর থেকেও হঠাৎ করে হাত পা বেঁকে যেতে থাকে। এরপর বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করলেও কোন লাভ হয়নি। বর্তমানে দুই সন্তানের উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতাও নেই। খাওয়াও নিজের হাতে ঠিকতম পারে না। পড়াশুনা ইচ্ছে থাকলেও দারিদ্রতার কারণে পরিবারের লোকজন তাঁদের স্কুলে নিয়ে যাননি।
নুর মহম্মদের স্ত্রী নায়েস বিবি বলেন, দুই ছেলে মেয়েকেই পোলিও টিকা খাইয়েছি । তবুও ওদের হাত পা বেঁকে গিয়েছে। মেয়ের চিকিৎসা করতে প্রায় ৬৫ হাজার ও ছেলের চিকিৎসায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করেও কোন লাভ হয়নি। এখন আর টাকার অভাবে চিকিৎসাও করতে পারিনা। তার উপর শাশুডিও অসুস্থ হয়ে পরে রয়েছেন। তাঁরও চিকিৎসা করতে পারিনা। স্বামী দিনমজুরি করে যা রোগজার করেন তাই দিয়ে শুধু পেটে খাওয়া হয়।
নায়েসা বিবি আরও বলেন, এলাকার বহু নেতা ও প্রশাসনের লোকজনের কাছে গিয়েছিলাম। ছেলে মেয়েদের সুস্থ করার জন্য। কিন্তু কেউ কোন সাহায্য করেননি। তবে বড়ঞা বিডিও তিনবার জেনারেল রিলিফ দিয়েছেন।
এদিকে পরিবারের নাসরিনের প্রতিবন্ধী শংসাপত্র থাকলেও চাঁদ মহম্মদের এখনও ডশংসাপত্র করতে পারা যায়নি। পরিবারের অভিযোগ কোন সরকারি ভাতা থেকে কোন রকম সহযোগিতা তাঁরা পাচ্ছেন না। তাই সকলের কাছে সাহায্যের আর্তি জানিয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct