আপনজন ডেস্ক: দেশের সর্বোচ্চ বিচার বিভাগীয় অফিসে তার এক সপ্তাহ সময় বাকি থাকতে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এখনও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেননি। সিজেআই চন্দ্রচূড় অফিসের পদত্যাগের আগে মূল রায়গুলি এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু চরিত্র নিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ রায়দান স্থগিত রেখেছিল। সাত বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ ২০০৬ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের ১৯৮১ সালের সংশোধনীতে এলাহাবাদকে সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়ার যে রায় দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে একটি রেফারেন্সের শুনানি চলছিল।
১৯৬৭ সালের আজিজ বাশা মামলায় পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধনী) আইন, ১৯৮১ অনুসারে সংসদ এই প্রতিষ্ঠানকে সংখ্যালঘু মর্যাদা দিয়েছে।
মৌখিক যুক্তিতর্ক চলাকালীন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় মৌখিকভাবে বলেছিলেন, কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের তৈরি আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বলে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সংখ্যালঘু মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করা যায় না।আজ, একটি নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রে, কিছুই নিরঙ্কুশ নয়। প্রশাসনের অধিকার একটি আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় বলেই প্রতিষ্ঠানের সংখ্যালঘু চরিত্র ক্ষুণ্ণ হয় না। এছাড়া প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সম্প্রতি এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একগুচ্ছ আবেদনের বিষয়ে তার রায় সংরক্ষণ করেছে, যা উত্তরপ্রদেশ বোর্ড অফ মাদ্রাসা শিক্ষা আইন, ২০০৪-কে অসাংবিধানিক ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির লঙ্ঘন বলে বাতিল করেছিল।এর আগে ৫ এপ্রিল বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছিল যে এলাহাবাদ হাইকোর্ট মাদ্রাসা আইনের বিধানগুলিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছে এবং তারা যে মতামত নিয়েছিল তা প্রাথমিকভাবে সঠিক নয়।
মাদ্রাসা আইন, ২০০৪-এর বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একজন আইনজীবীর দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার (পিআইএল) রায় দিতে গিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ২২ মার্চের আদেশে বলে, উত্তরপ্রদেশের মাদ্রাসা আইনটি ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি, ভারতীয় সংবিধানের ১৪, ২১ এবং ২১-এ অনুচ্ছেদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আইনের ২২ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করে। উত্তরপ্রদেশ সরকারকে মাদ্রাসা পড়ুয়াদের নিয়মিত স্কুলে ভর্তি করার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয়। সেই মামলারও চূড়ান্ত রায় দেবেন প্রধান বিচারপতি।
অন্যদিকে এলএমভি শ্রেণির গাড়ি চালাতে লাইট মোটর ভেহিকল (এলএমভি) লাইসেন্সধারীদের আলাদা অনুমোদনের প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ।
এচাড়া দিল্লি রিজ এলাকায় গাছ কাটা নিয়ে রায় প্রদান করবেন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আদালত অবমাননার আবেদন খারিজ করে বলে, শীর্ষ আদালতের অনুমতি না নিয়েই দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ডিডিএ) শৈলশিরার উপর প্রচুর গাছ কেটে ফেলেছে। সেই মামলার চূড়ান্ত রায় দেবেন। তবে, সবার আগ্রহ এখন আলিগড় নিয়ে। তাই প্রধান বিচারপতি অবসরের আগে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু চরিত্রের পক্ষে রায় দেবেন কিনা সেটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে সংখ্যালঘু সমাজ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct