আপনজন ডেস্ক: রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান নিরাপত্তা পরিষদের উপ-চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা এড়াতে রাশিয়ার পক্ষ থেকে দেওয়া পারমাণবিক সতর্কতাকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাসের এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বলা হয়, মেদভেদেভ সতর্ক করে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র মনে করে রাশিয়া অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লেও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না, তবে সেটি হবে তাদের মারাত্মক ভুল। মেদভেদেভ ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা যদি মনে করেন রাশিয়া চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করবে না, তবে তারা ভুল করছেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমান মার্কিন ও ইউরোপীয় রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রয়াত হেনরি কিসিঞ্জারের মতো দূরদর্শী নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। আরটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন, ‘যদি আমাদের রাষ্ট্রের অস্তিত্বের হুমকি আসে, তবে রাশিয়ার কোনো বিকল্প থাকবে না।’ তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট পুতিনসহ রাশিয়ার অন্যান্য কর্মকর্তারা বারবার এ বিষয়ে সরাসরি বার্তা দিয়েছেন।
রাশিয়ার সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ এখন অত্যন্ত জটিল ও বিপজ্জনক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। পূর্ব ইউক্রেনের দিকে রাশিয়ার সামরিক অগ্রযাত্রা এবং পশ্চিম ইউক্রেনের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে রাশিয়া চিন্তাভাবনা করছে। ইউক্রেনের মূল অঞ্চলে রুশ বাহিনী প্রবেশের বিষয়ে সক্রিয় আলোচনাও চলছে।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের দেওয়া অস্ত্র সরবরাহে রাশিয়ার গভীরে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কা বাড়ছে। রাশিয়া সম্প্রতি পশ্চিমা বিশ্বকে সতর্ক করে জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের বিস্তার ঘটলে তারা কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে। এছাড়া, ন্যাটোর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়া পশ্চিম রাশিয়ায় ১০ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে। রুশ পক্ষের মতে, ইউরোপীয় নিরাপত্তা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের জটিল পরিস্থিতি বোঝার ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্ব যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি। স্নায়ুযুদ্ধের পর এই মুহূর্তে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। ওয়াশিংটন যদিও বলছে, তারা ইউক্রেন যুদ্ধের সম্প্রসারণ চায় না, তবুও তাদের মিত্রদের দিয়ে ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়া পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলছে।
রাশিয়ার তরফ থেকে দেওয়া বার্তাগুলো নিয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি নীতি নিয়ে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct