আপনজন ডেস্ক: ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামো সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার ১২,৮৫০ কোটি টাকার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেছেন। সেই সূচনা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার জন্য পশ্চিমবাংলা ও দিল্লির সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থের অভিযোগ তুলে সমালোচনা করেন। অপরদিকে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে বাংলার “উল্লেখযোগ্য সাফল্য”র কথা তুলে ধরেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেছেন, হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে পশ্চিমবাংলা “উল্লেখযোগ্য সাফল্য” অর্জন করেছে এবং বর্তমানে এর প্রাদুর্ভাবের হার ০.০৭ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রী গর্ভবতী মা এবং নবজাতকদের মধ্যে হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে ২০২২ সাল থেকে রাজ্যে পরিচালিত গণ টিকাকরণ কর্মসূচিরও প্রশংসা করেন। তিনি বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আপনাদের জানাতে চাই যে পশ্চিমবঙ্গ হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। সাম্প্রতিক একটি জাতীয় সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণের হার ০.০৭ শতাংশ দেখানো হয়েছে, যা রাজ্যে শক্তিশালী হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নির্দেশ করে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সাফল্যের হার প্রত্যাশার চেয়ে ভালো। আগামী দিনে রাজ্যে এর প্রাদুর্ভাব দূর করতে এই কর্মসূচি আরও জোরালোভাবে অনুসরণ করা হবে।’ মুখ্যমন্ত্রী ৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে হেপাটাইটিস বি এর সংক্রমণের পরিসংখ্যান খুঁজে বের করার জন্য জাতীয় ভাইরাল হেপাটাইটিস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি দ্বারা পরিচালিত একটি সমীক্ষার কথাও উল্লেখ করেছিলেন। হেপাটাইটিস বি একটি ভাইরাল সংক্রমণ যা লিভারকে প্রভাবিত করে।
যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবাংলার এই সাফল্য নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি, বরং তিনি আয়ুষ্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে শুধু বাংলা ও দিল্লির সমালোচনায় মুখর হন। মঙ্গলবার দিল্লিতে নবম আয়ুর্বেদ দিবস এবং ওষুধের ‘দেবতা’ হিসাবে বিবেচিত ধন্বন্তরীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে মোদি বেশ কয়েকটি বিশেষ উদ্যোগ নেন যার মধ্যে ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য বিমার অন্তর্ভুক্ত করা এবং ইউ-উইন পোর্টাল যা টিকাদান প্রক্রিয়াটিকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজ করে গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুদের উপকার করার চেষ্টা করে। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদি বলেন,আমি দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গের ৭০ বছরের বেশি বয়সি সমস্ত প্রবীণদের কাছে ক্ষমা চাইছি যে আমি তাদের সেবা করতে পারছি না। এই দুই রাজ্যের প্রবীণরা সম্প্রসারিত কর্মসূচির অধীনে বিনামূল্যে চিকিৎসা গ্রহণ করতে না পারার জন্য ব্যথিত। কারণ দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পে যোগ দিচ্ছে না। ২০২৫ সালে দিল্লিতে ও ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন সেকথাও স্মরণ করান মোদি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct