সাবের আলি, বড়ঞা, আপনজন: দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলার পর রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে দিন যাপন করতে হচ্ছে বড়ঞা থানার নিমা গ্রামের সামেনা বিবিকে। দুই সন্তান কয়েকবছর আগেই তাঁকে ছেড়ে পালিয়েছে। নিজের ঘর বাড়িও নেই। রাত কাটে প্রতিবেশিদের বারান্দায়। মেলেনি কোন সরকারি সুযোগ সুবিধাও। শুধুমাত্র প্রতিবেশিদের দেওয়া খাবারে দিন কাটছে তাঁর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ৫৪এর ওই প্রৌঢ়া দির্ঘদিন পরিচারিকার কাজে উত্তরপ্রদেশে ছিলেন। সেই হিসেবে সেখানেই তিনি তাঁর পরিচয়পত্র তৈরি করেন। এরপর স্বামী মারা গেলে বছর দশেক আগে গ্রামে ফিরে আসেন। সেইসময় দুই সন্তানকে নিয়ে দিন কাটত তাঁর। কিন্তু প্রায় ছয়বছর আগে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। চিকিৎসা করিয়েও দৃষ্টি ফেরেনি। এমন অবস্থায় তাঁর দুই ছেলে মেয়েও তাঁকে গ্রামে ফেলে চলে যান। পরবর্তীতে এখনও পর্যন্ত তাঁর কোন খোঁজ খবর নেননি। দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলার পর কেটে গিয়েছে ছয়টি বছর। এখন তাঁর দিন কাটে অন্যের বারান্দায়। সামেনা জানান, স্বাণমী মারা যাওগার পর দৃষ্টি শক্তিও হারিয়ে ফেলি। তার উপর ছেলে মেয়েরাও আরআসেনা। এখন দিন কাটে প্রতিবেশিদের দেওয়া খাবার খেয়ে। কোনরকমে ভিক্ষা করে দিন চলে যায়।
কোন সরকারি না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকবার পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সদস্যদের কাছে গিয়েছি। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। কোন সরকারি ভাতা আমায় দেওয়া হয় না। নিজের বাড়ি ঘরও নেই। তাই পরের বারান্দায় দিন কাটে।
যদিও প্রতিবেশি সালমা বেওয়া বলেন, যখন ওঁর চোখের দৃষ্টিশক্তি ছিল। তটখন পরের বাজড়িতে কাজ করে দিন চলত। সরকারি জায়গায় একটি কুঁড়ে ঘরও ছিল। এখন ওঁর বিছানা পাতা হয় কারও বারান্দায়। তিনি তাড়িয়ে দিলে আবার অন্যের বারান্দায় আশ্রয় নেন। প্রতিবেশিরা খাবার দিলে তবেই খেতে পান। এমনি ভাবেই কাটছে বছরের পর বছর। যদিও গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য ফুরকান শেখ বলেন, ওই মহিলার সমস্যাটা একেবারে সত্যি। তবে পঞ্চায়েতগত ভাবে আমরাও কিছু করতে পারছি না। কারন উনার আধার কার্ড উত্তরপ্রদেশের ঠিকানায় রয়েছে। সেটা কোনমতে খোনে ট্রান্সফার করা যাচ্ছে না। এমন না হলে তিনি কোন সরকারি সুযোগ অসুবিধা পাবেন না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct