সুভাষ চন্দ্র দাশ, সুন্দরবন, আপনজন: আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে আবারও একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়তে চলেছে সমগ্র সুন্দরবনবাসী। ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে সতর্কবার্তা জারী করা হয়েছে জেলা জুড়ে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবারও বিগত ২০০৯ সালের ২৫ মে আয়লা’র স্মৃতি ফিরতে চলেছে। উল্লেখ্য আম্ফান, ইয়াস ও বিধ্বংসী আয়লার স্মৃতি উস্কে ২৩,২৪ ও ২৫ অক্টোবর সুন্দরবনে আঘাত হানতে চলেছে আরো এক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’! হতে পারে প্রবল বৃষ্টিপাতও।
২০২০ সালের ২০ মে ‘আম্ফান’ ও ২০২১ সালের ২৬ মে ‘ইয়াস’ ,২০২৪ এর ২৬ মে ‘রেমাল’ বিধ্বংসী রূপ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল দুই ২৪ পরগনার অন্তর্গত সুন্দরবন উপকূলবর্তী এলাকায়। এছাড়াও ফণী,বুলবুল আছড়ে পড়েছিল। বিগত ২০০৯ সালে প্রায় ২৫ মে পশ্চিমবঙ্গ সহ বাংলাদেশ উপকূলেও তীব্র গতিতে আছড়ে পড়েছিল ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘আয়লা’। বছরে বছরে হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় গুলির ধাক্কায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকে শুরু করে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটেছিল সমগ্র সুন্দরবন সহ এরাজ্যে। ঘটেছিল নদীবাঁধ ভেঙে জলোচ্ছ্বাস। নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিল অসংখ্য বসতবাড়ি,কৃষিজমি। বর্তমানে সুন্দরবনের নদীবাঁধের অবস্থা অত্যন্ত সংকীর্ণ। সুন্দরবনের মোট নদীবাঁধ ৩৫০০ কিলোমিটার। বিগত আয়লা তে ৭৭৮ কিমি নদীবাঁধ প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রের তৎকালীন ইউপিএ সরকার সুন্দরবনের নদীবাঁধ সংস্কারের জন্য ৫০৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এমনকি সুন্দরবনের নদীবাঁধ নিয়ে মাষ্টার প্লান করার কথা বার বার বলা হলেও তা আজও অথৈই জলে। কেন্দ্রের বরাদ্দ টাকা প্রায় সমস্তটাই ফেরত চলে যায়। সেই থেকে আজও দুঃশ্চিন্তায় কাটাতে হয় সুন্দরবনের বাসিন্দাদের।
উল্লেখ্য ‘ডানা’ আসার খবরে সেই আতঙ্ক যেন আবারও গ্রাস করে ফিরে আসছে উপকূলবাসীদের মনে!ডানা তান্ডব চালালে সুন্দরবনের নদীবাঁধ ভেঙে লবনাক্ত জল লোকালয়ে ঢুকে প্লাবিত হতে পারে আশাঙ্কা বাসিন্দাদের। আবারও বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct