আপনজন ডেস্ক: তুর্কি ধর্মগুরু ফেতুল্লাহ গুলেন ৮৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। গুলেন ১৯৯৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবন যাপন করছিলেন। জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের সাবেক মিত্র গুলেনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে একটি ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবনযাপন করেছিলেন।
তুর্কি মুসলিম ধর্মগুরু ফেতুল্লাহ গুলেন যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন বলে বলে সোমবার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এবং গুলেনপন্থীদের একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে।
গুলেনের মৃত্যু সংবাদ প্রকাশ করে ওয়েবসাইট হারকুল সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গুলেন রোববার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের কট্টর সমালোচক ছিলেন গুলেন। অথচ একসময় ছিলেন ঘনিষ্ঠ সহযোগী। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের পোকোনো পার্বত্য এলাকার একটি ছোট শহরে থাকতেন তিনি। ১৯৯৯ সাল থেকেই সেখানে থাকতেন। নিজ দেশ তুরস্কে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস। এরপর থেকে গুলেন একধরনের অজ্ঞাতবাসের মধ্যেই থাকতেন। এ ধর্মপ্রচারক কাউকে সাক্ষাৎকার দেন না, জনসমক্ষেও খুব একটা আসতেন না। সাম্প্রতিক সময়ে গুলেনকে নতুন ঠিকানায় দেখা গিয়েছিল। হিজমত নামে পরিচিত গুলেন সমর্থকদের আন্দোলন তুরস্কে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় এরদোয়ান ও গুলেনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তুরস্কের গণমাধ্যম, পুলিশ ও বিচার বিভাগে এ আন্দোলন জনপ্রিয়তা পায়। আর এ বিষয়টি নিয়েই একসময়ের সহযোগী গুলেন পরিণত হয়েছেন এরদোয়ানের শত্রুতে। ২০১৩ সালে গুলেন-এরদোয়ান বৈরিতা একেবারে প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। ওই বছর তুরস্কের বিচার বিভাগীয় কয়েকজন কর্মকর্তা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ছেলে বিলালসহ বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন। ওই বিচারিক কর্মকর্তারা গুলেন আন্দোলনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এরদোয়ান পাল্টা আঘাত হানেন। তিনি সেনাবাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ জেনারেল এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেন। বন্ধ করে দেন হিজমত পরিচালিত বিভিন্ন স্কুল। এরদোয়ানের ‘শত্রুর’ প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে পরিচিত কয়েকটি সংবাদপত্রও সরকারের রোষের শিকার হন। এরদোয়ান সরকার ‘রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার অভিযোগ আনে হিজমতের বিরুদ্ধে। তবে হিজমতের নেতারা দাবি করেন, তাদের আন্দোলন গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং আন্তধর্ম সংলাপে বিশ্বাস করে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct