আপনজন ডেস্ক: সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ভক্ত হলে এই খবরে আপনি খুশিই হবেন। আইপিএলের আগামী মৌসুমেও যে হায়দরাবাদ ঝড় তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত মৌসুমে খেলার ধরন যাঁরা অনেকটাই বদলে দিয়েছেন, সেই হাইনরিখ ক্লাসেন, অভিষেক শর্মা, ট্রাভিস হেডদের নিলামেই তোলার সুযোগ দিচ্ছে না ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ক্রিকেট–বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, তাঁদের ধরে রাখতে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে যাচ্ছে হায়দরাবাদ।
আইপিএলের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি সর্বোচ্চ ছয়জন খেলোয়াড় ধরে রাখতে পারবে। তবে এই ছয়জনের মধ্যে অবশ্যই একজন ‘আনক্যাপড’ (আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়নি) খেলোয়াড় থাকতে হবে।
বাকি পাঁচজনের জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই পাঁচজন বিদেশিও হতে পারেন অথবা ভারতীয় এবং বিদেশি মিলিয়েও হতে পারে। আনক্যাপড খেলোয়াড়দের জন্য বেতনের সীমা ৪ কোটি টাকা।
বাকি পাঁচজনকে ধরে রাখার নিয়মটা এ রকম—প্রথম তিনজনকে ধরে রাখতে হবে যথাক্রমে ১৮ কোটি, ১৪ কোটি ও ১১ কোটি টাকাতে। শেষ দুজনের জন্য বরাদ্দ ১৮ ও ১৪ কোটি টাকা। তবে চাইলে এই ৭৫ কোটি টাকা পাঁচজন ক্যাপড ক্রিকেটারদের মধ্যে নিজেদের মতো করেও বণ্টন করতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজি। হায়দরাবাদ এই সুযোগটাই নিচ্ছে।
তাই তারা ক্লাসেনকে পেতে খরচ করতে যাচ্ছে ২৩ কোটি টাকা। ধরে রাখা ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনি থাকবেন ১ নম্বরে। দক্ষিণ আফ্রিকান এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানকে ২০১৮ সালে ৫০ লাখ টাকাতে কিনেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। গত বছর তাঁকে ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকাতে দলে টানে হায়দরাবাদ।
হেড ও অভিষেক গত মৌসুমে বোলারদের ওপর রীতিমতো ‘অত্যাচার’ করেছেন
হেড ও অভিষেক গত মৌসুমে বোলারদের ওপর রীতিমতো ‘অত্যাচার’ করেছেনএএফপি
অর্থাৎ, ৫ বছরের ব্যবধানে তাঁর দাম বেড়ে যায় সাড়ে ১০ গুণ। হায়দবাদের হয়ে গত দুই মৌসুম ১৭৭ ও ১৭১ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন ক্লাসেন। ৪১টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৬৩টি ছক্কা। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রতি অন্য দলগুলোর আগ্রহ বেড়ে গেছে। এ কারণেই ক্লাসেনকে রেখে দিতে ২৩ কোটি টাকা ঢালতে যাচ্ছে হায়দরাবাদ। সেটা হলে এক বছরের ব্যবধানে তাঁর পারিশ্রমিক বাড়বে ৩৩৮ শতাংশ।
ক্রিকইনফো আরও জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকেও ধরে রাখতে যাচ্ছে হায়দরাবাদ। তাঁকে রাখা হবে ১৮ কোটি টাকা খরচ করে। আর ওপেনার অভিষেককে রেখে দিতে দেওয়া হবে ১৪ কোটি টাকা। হেড ও নীতীশ রেড্ডিকেও ধরে রাখবে তারা। দ্রুতই সেরে ফেলবে চুক্তি।
মানে, ৭৫ কোটি টাকার বাকি থাকা অংশ দেওয়া হবে এই দুই ক্রিকেটারকে। খেলোয়াড় ধরে রাখা ও ছেড়ে দেওয়ার তালিকা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) জমা দিতে হবে। আইপিএলে দল তৈরি করতে একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি মোট ১২০ কোটি টাকা খরচ করতে পারবে।
হায়দরাবাদ যাঁদের ধরে রাখছে, দলে তাঁদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব একটা ভূমিকা আছে। দুই ওপেনার হেড ও অভিষেক গত মৌসুমে বোলারদের ওপর রীতিমতো ‘অত্যাচার’ করেছেন। দুজনে মিলে ছক্কা মেরেছেন ৭৪টি। অভিষেক মেরেছিলেন আসরের সর্বোচ্চ ৪২ ছক্কা। অভিষেক মোট রান ছিল ৪৮৪, এর মধ্যে ৩৯৬ রানই বাউন্ডারি থেকে। হেড আর ক্লাসেনকে নিয়ে মনে হয় বাড়তি শব্দ খরচের প্রয়োজন নেই। এই দুজন বোলারদের ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন।
কামিন্সের ভূমিকা হবে ভিন্ন। ব্যাটে–বলে তাঁর কাছ থেকে হায়দরাবাদ যতটা না চায়, তার চেয়ে অধিনায়ক হিসেবে প্রত্যাশাটা বেশি। আর নীতীশ গত মৌসুমেই প্রথমবার আইপিএল খেলেছেন। ১১ ম্যাচে মেরেছিলেন ২১টি ছক্কা। সর্বশেষ বাংলাদেশ সিরিজেও সুযোগ পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে করেছিলেন ৩৩ বলে ৭৪ রান। তাই মিডল অর্ডারে তাঁর কাছ থেকে আরেকটু বেশি চাইবে দলটি। সব মিলিয়ে দলের মূল ভিত ধরে রেখেই নিলামে যাবে হায়দরাবাদ।
এ দিকে, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বোলিং কোচের দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন ডেল স্টেইন। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই ফাস্ট বোলার গত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানান। তবে সানরাইজার্সের মালিকানাধীন এসএ২০–এর ফ্র্যাঞ্চাইজি ইস্টার্ন কেপের হয়ে কাজ চালিয়ে যাবেন। এসএ২০–এর প্রথম দুই মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইস্টার্ন কেপ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct