আপনজন ডেস্ক: তেহরানের উপর ইসরায়েলি হামলার ক্রমবর্ধমান হুমকি এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠিকে নির্মূল করার ইসরায়েলের প্রচেষ্টার প্রতি মার্কিন সমর্থনের ক্রমবর্ধমান নজিরের মুখে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, তা নিয়ে তার প্রতিপক্ষের সাথে আলোচনা বসতে সউদী আরব যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগ্শি।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ, যেটি ক্রমেই মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে একটি বহুমুখী যুদ্ধে পরিণত হচ্ছে, সেখানে ইরান ও সউদী আরব সম্ভব্য দুই প্রধান আঞ্চলিক খেলোয়াড়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বৈরুত এবং দামেস্ক সফর করেছেন। তিনি হিজবুল্লাহকে পিছু হটতে ও পুনরায় সংগঠিত করতে এবং লেবাননকে দ্বিতীয় গাজায় পরিণত হতে বাধা দেওয়া সংক্রান্ত যে কোনও জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে।
লেবানন অতীতে তেহরান এবং রিয়াদের মধ্যে বৈরিতার একটি উৎস ছিল। বরাবরই সউদী আরব এই অঞ্চলে ইরান ও হিজবুল্লাহর প্রভাব হ্রাস দেখতে চেয়েছে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যকে একটি বিস্তুৃত যুদ্ধের থেকে বাঁচাতে সউদী আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সউদও এখন ইরানের সাথে সম্পর্ক উন্নত করার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী যাত্রার জন্য প্রস্তুত।
সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী চান যে, লেবানন সহ ইসরায়েলি উত্তেজনা এবং ইরানের উপর একটি বড় আক্রমণের জোড়া বিপদকে প্রতিহত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আরও পদক্ষেপ নিক। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে সমর্থন দিতে ইসরায়েলের অস্বীকৃতিতেও প্রিন্স ফয়সাল গভীরভাবে হতাশ।
সউদী কূটনীতিকরা হামাসের রাজনৈতিক বিভাগের প্রধান বাসেন নাইমের মন্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, ‘যদি আমাদের একটি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সুযোগ থাকে, আমরা সহযোগিতা করব এবং এর অংশ হব।’ নাইমের মন্তব্যে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সঙ্কটকে দ্বৈত রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে সমাধানের ইঙ্গিত রয়েছে।
ইরান-সউদী আলোচনার বেশিরভাগ অংশেই লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া কীভাবে দেওয়া যায়, ইরান সঙ্কট প্রশমনের জন্য একটি কূটনৈতিক পথ পুনরুজ্জীবিত করতে চায় কিনা এবং হিজবুল্লাহকে সামরিকভাবে পুনরুদ্ধার সম্ভব বলে মনে করে কিনা, সেদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে।
এর আগে. সউদী আরব ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘে আরোপিত ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করেছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য দ্বারা সমর্থিত ছিল। কিন্তু, শুরুর ৪৮ ঘন্টা পরই যুদ্ধবিরতি অকার্যকর হয়ে পড়ে, যখন এর শর্তগুলি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু প্রত্যাখ্যান করেন এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পরামর্শ না করেই বৈরুতে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করেন।
তবে, ইরান ও সউদী আরব এটি সম্ভাব্য সমাধানে পৌছাতে চাইলেও, যুক্তরাষ্ট্র আপাতত যুদ্ধবিরতির ধারণাকে বাতিল করেছে বলে মনে হচ্ছে। ইসরায়েলের পদক্ষেপকে সীমিত অনুপ্রবেশ হিসেবে বর্ণনা করে মার্কিন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র ইসরায়েলের পদক্ষেপকে সমর্থন করে বলেছেন, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি এবং একটি কূটনৈতিক রেজোলিউশন দেখতে চাই, কিন্তু আমরা মনে করি এটি যথাযথ যে ইসরায়েল, এই মুহুর্তে, সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনছে এবং হিজবুল্লাহকে সীমান্ত থেকে হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct