সন্ন্যাসী কাউরী , কোলাঘাট, আপনজন: কোলাঘাট ব্লকের গুরুত্বপূর্ণ দেনান-দেহাটি জলনিকাশী প্রকল্প ৪৮ বছর পরও রূপায়িত না হওয়ায় ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার জল রূপনারায়ন নদী দিয়ে বার হতে পারছে না। ফলস্বরূপ প্রায় মাসাধিক কাল ধরে জলমগ্ন রয়েছে কোলাঘাটের প্রায় কুড়ি থেকে পঁচিশটি গ্রাম। এই অবস্থায় জলবন্দী এলাকায় তৈরী হওয়া গোবিন্দচকের বেআইনি মাছের ভেড়ি সংলগ্ন এলাকা আজ পরিদর্শনে আসেন কোলাঘাটের বিডিও অর্ঘ্য ঘোষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুরজিৎ মান্না, এবং সেচ দপ্তরের এসডিও। এছাড়াও পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক সহ সাগরবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ- প্রধান ও বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিরা। পরিদর্শনের পর বি ডি ও গোবিন্দচক স্লুইশগেটের সামনে দুটি বেআইনী মাছের ভেড়ির মধ্য দিয়ে যে নাসা খালটি মাঠ পর্যন্ত গিয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধানকে সেই নাসা খালটি অবিলম্বে পরিষ্কার ও সংস্কারের নির্দেশ দেন। এছাড়াও জলমগ্ন এলাকার দূষিত জল দ্রুত বের করার ব্যাপারে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায়,সে ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য আগামী ১৪ অক্টোবর বিকেলে বিডিও অফিসে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে মিটিং করা হবে বলে জানিয়েছেন বিডিও অর্ঘ্য ঘোষ।
কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক অভিযোগ করে বলেন,১৯৭৫ সালে সেচ দপ্তর উক্ত এলাকার নিকাশী সমস্যা সমাধানে দেনান-দেহাটি ড্রেনেজ স্কীম রূপায়ণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু প্রকল্প মঞ্জুরের ৪৮ বছর পরও প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ রূপায়ন না হওয়ায় চলতি বছরেও কোলাঘাট,পাঁশকুড়া ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশের আমন ধানের চাষ নষ্ট হয়েছে।
শুধু তাই নয়, এলাকার প্রধান অর্থকরী ফসল ফুল সহ নিচু এলাকার রাস্তাঘাটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলনিকাশীর অভাবে বেশ কিছু পুকুরও ইতিমধ্যে ডুবে গিয়ে মাছ ভেসে গিয়েছে।
অথচ এলাকা থেকে মাত্র ছ-সাত কিলোমিটার দূরেই কোলাঘাটের রূপনারায়ণ নদী। কোলাঘাটের কাছে রূপনারায়ণের এখনো জলবহন করার যে ক্ষমতা রয়েছে,তাতে এলাকা জলমগ্ন হওয়ার কথা নয়। শুধুমাত্র জলনিকাশীর সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায়, নিকাশী খালগুলি নিয়মিত পূর্ণ সংস্কার না হওয়ায় ও খালের ভেতরে যত্রতত্র অবৈধ কাঠামো এবং ডজলনিকাশী অবরুদ্ধ করে বেআইনী মাছের ভেড়ি গড়ে ওঠার কারণে এই বিপত্তি বলে নারায়ণবাবুর অভিযোগ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct