আপনজন ডেস্ক: আরজি কর ধর্ষণ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার ও মেডিক্যাল পড়ুয়ারা আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টার অনশনের ডাক দিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা জানান, তাদের মধ্যে ছয়জন ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ অনশনে বসবেন। জুনিয়র ডাক্তাররা আরও বলেছিলেন যে একই দিনে একটি প্রতীকী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং সমর্থকদের তাদের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ৯ অগস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার থেকে এক মহিলা শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে সরব চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের দাবির মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণ ও হাসপাতালে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো।
ধর্মঘটে অংশ নেওয়া জুনিয়র ডাক্তারদের একজন ডা. সৌমদীপ রায় বলেন, আমাদের কলেজের লোকেরা প্রায় দু’দিন ধরে অনশন করছেন। ৩৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে, সরকার আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন চলবে। কলেজ থেকে মিছিল হবে এবং আরও অনেক কলেজ ও জুনিয়র ডাক্তাররা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে প্রতীকী অনশন ধর্মঘটে অংশ নেবেন।
সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ডা. সৌমদীপ বলেন, চার্জশিটে কী রয়েছে তা আমাদের দেখতে হবে, তবে আমরা সর্বদা বলেছি যে এই ঘটনার পিছনে উদ্দেশ্য স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত - কতজন পুরোপুরি জড়িত এবং কতটা প্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে - এই সমস্ত কিছু প্রকাশ্যে আসা উচিত। যতক্ষণ না এই সব প্রকাশ পাচ্ছে, ততক্ষণ আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি না। অভয়ার নতুন ভাবনা নিয়ে শুরু হয়েছিল এই লড়াই, যতক্ষণ না অভয়ার কাছ থেকে নতুন আইডিয়া পাচ্ছি, ততক্ষণ আমাদের লড়াই চলবে। তিনি অরও বলেন, আমরা যে বিষয়টি উত্থাপন করতে চাই তা হল: আমরা একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আছি এবং প্রত্যেকেরই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ এবং অনশন ধর্মঘটে জড়িত হওয়ার অধিকার রয়েছে। অনশন ধর্মঘট শান্তিপূর্ণভাবে চলছে, কিন্তু সরকার আগে থেকে বিশ্রামাগারে ঢুকতে না দিয়ে এবং আমাদের এখানে বসতে না দিয়ে আমাদের থামানোর চেষ্টা করছে। এটা ঠিক নয়। কারণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অনুমতি দেওয়া উচিত, এবং এটি রক্ষা করা সরকারের কর্তব্য।
আরেক অংশগ্রহণকারী ডা. তৌহিদ মঙ্গলবারের সূচি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের যেসব চিকিৎসক অনশনে আছেন তারা অনশন চালিয়ে যাবেন। মঙ্গলবারসকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আমরাও অনশনে অংশ নেব। এটা শুধু চিকিৎসকদের জন্য নয়; যে কোনও সাধারণ মানুষ অনশনে যোগ দিতে চাইলে আমাদের সঙ্গে এখানে থাকতে পারেন। অনশন ধর্মঘটের পাশাপাশি কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মহামিছিলের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তৌহিদ বলেন, আমরা মেডিকেল কলেজ থেকে সিনিয়র ডাক্তারদের দ্বারা আয়োজিত একটি সমাবেশও করব, যেখানে আমরা অংশ নেব।
মঙ্গলবারের অনশনের ঘোষণার পর জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন প্রত্যাহারের আর্জি জানালেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি আর্জি জানিয়ে বলেন, আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ৯০ শতাংশ উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হয়ে যাবে। সবাইকে কাজে ফিরতে অনুরোধ করছি। অনেকে ফিরেছেন। বাকিরাও ফিরুন। মানুষকে পরিষেবা দিন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct