জিয়াউল হক, হুগলি, আপনজন: হুগলির চুঁচুড়া আদালতে একটি মর্মান্তিক মামলার রায় ঘোষণা করা হল শনিবার। যেখানে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩ জুন পোলবা থানার অন্তর্গত সুগন্ধার যাদবপুর এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ পূর্ণিমা মেটে বাড়ি থেকে কাজে বের হন। পূর্ণিমার স্বামী প্রদীপ মেটে, যিনি আনাজের ব্যবসা করতেন, সেই সময় কামদেবপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পূর্ণিমার উপর আকস্মিকভাবে আক্রমণ করেন। ঘটনার আকস্মিকতায় পূর্ণিমা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যান এবং তার দু’হাতের চারটি আঙুল কেটে পড়ে যায়।
এলাকার বাসিন্দারা দ্রুত এসে ঘটনাটি দেখার পর পুলিশে খবর দেয় এবং পূর্ণিমাকে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল, পরে তাকে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়, যেখানে ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
পূর্ণিমার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বামীর বিরুদ্ধে পোলবা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পোলবা থানার পুলিশ প্রদীপকে গ্রেফতার করে এবং ৩৪১, ৩২৬ ও ৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায়, চুঁচুড়া আদালতে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় কোর্টের বিচারক শ্রীমতি অরুন্ধতী ভট্টাচার্য গতকাল প্রদীপকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আজ রায়ে প্রদীপ মেটেকে ৩৪১ ধারায় একমাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০০ টাকা জরিমানা (অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাবাস), ৩২৬ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০,০০০ টাকা জরিমানা (অনাদায়ে ছয় মাসের কারাবাস), এবং ৩০৭ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই সমস্ত সাজা একই সাথে কার্যকর হবে। এই রায়ের মাধ্যমে পূর্ণিমার পরিবার ন্যায়বিচার পেল এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct