আপনজন ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসেবে চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বিএফআইইউ’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পুঁজিবাজারে কারসাজি ও আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে সাকিব ও তার স্ত্রীসহ আরও ৭ জনকে ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের নাম, কোম্পানি বা সংগঠনের নামে থাকা সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) ও ডিপোজিট প্লাস স্কিম (ডিপিএস) হিসাবের তথ্য জানাতে বলেছে বিএফআইইউ। সাকিব আল হাসান ছাড়াও তার স্ত্রী উম্মে রোমান আহমেদ (শিশির), আবুল খায়ের হিরুর বাবা আবুল কালাম মাদবর, হিরুর ভাই মোহাম্মদ বাশার, বোন কনিকা আফরোজ ও ব্যবসায়ী মো. নাজমুল বাশার খানের ব্যক্তিগত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেয় বিএফআইইউ। সাকিব ক্রিকেটের পাশাপাশি অনেক আগেই নানা ব্যবসায় নামেন। শেয়ারবাজার, সোনার ব্যবসা, কাকড়া থেকে শুরু করে ই-কমার্সেও বিনিয়োগ করেন তিনি। কিন্তু কোথাও খুব একটা সফলতার মুখ দেখেননি সাকিব। বরং জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়কের নানা ব্যবসায় অনিয়ম ও দূর্নীতি খবর প্রকাশ হয়েছে। সাতক্ষীরায় কাকড়া ব্যবসায় শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করা, জমি অধিগ্রহণে আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ আছে।
সর্বশেষ প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার দরে কারসাজির ঘটনায় গত ২৪শে সেপ্টেম্বর সাকিব আল হাসানকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সাকিবের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে এবং মালিকানায় থাকা কোম্পানির বিও হিসাবের মাধ্যমে শেয়ার দরে কারসাজির অভিযোগ আনে বিএসইসি। সাকিব পরবর্তীতে কানপুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হয়ে টেস্ট খেলার সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন। তখন তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করে প্রমাণ চান। সাকিব বলেন, ‘আমার লাইফে আমি নিজে থেকে কোনো ট্রেড করিনি। কেউ যদি এটা বলে আমি ট্রেডিংয়ে কথা বলেছি, আমাকে প্রমাণ দিলে আমি খুশি হবো।’
শেয়ার কেলেঙ্কারির ওই ঘটনায় বিতর্কিত সরকারি কর্মচারী আবুল খায়ের ওরফে হিরুকেও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করে বিএসইসি। এবার ব্যাংক হিসেবে তলবেও সাকিবের সঙ্গে নাম আছে আবুল খায়ের হিরুর বাবা আবুল কালাম মাদবর, ভাই মোহাম্মদ বাশার, বোন কনিকা আফরোজের।
গত জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাকিব আল হাসান। ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পর সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিরব থেকে ছাত্র-জনতার ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। এরপর আন্দোলনে গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যা মামলায় আসামী করা হয় তাকে। টানা দুই সিরিজ ভারত-পাকিস্তানে খেলার পর মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছেন সাকিব। এজন্য দেশে এসে আবার দেশ ছাড়া ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চান তিনি। যদিও বিসিবি ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct