আপনজন ডেস্ক: সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বলেছেন, বিশ্বে সংকট বাড়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সেগুলোর সুষ্ঠু সমাধান খুঁজে নাপেয়ে নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে এক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি ২৮সেপ্টেম্বর বলেন, দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সকলের উচিত রাজনৈতিক বিভাজন পরিহার করে সংলাপ ও পারস্পরিক সহযোগিতায় সম্পৃক্ত হওয়া। তার দেশ এ অঞ্চলে এবং অন্যত্র শান্তি ও উন্নয়নের প্রচেষ্টায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইল কর্তৃক সংঘটিত সকল অপরাধের নিন্দা ও বিরোধিতা করে এবং গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধ এই জনগণের দুর্ভোগের সর্বশেষ সংযোজন।
গত বছরের নভেম্বরে তার দেশ আরব ও মুসলিম জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা প্রকাশ করে এমন প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য একটি যৌথ আরব-ইসরাইল সম্মেলন করেছে। এভাবে সৌদি আরব রক্তপাত বন্ধ, মানবিক সহায়তা প্রদান এবং ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য দাবি বাস্তনায়নের বিশেষ করে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা করে। তিনি বলেন, সৌদি আরব এ বছরের ১০ মে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উপস্থাপিত প্রস্তাবটিকেও সমর্থন করেছিল, যেখানে বলা হয়েছিল যে ফিলিস্তিন জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হওয়ার শর্তাবলি পূরণ করে।
তার দেশ এ পর্যন্ত গাজা যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের জন্য ৫ বিলিযন ডলার সহাযতা দিেেছ এবং তাদের জন্য ১০৬ বিলিয় ডলারের সাহায্য প্রকল্পে জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থার সাথে কাজ করছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার (ইউএনআরএ) সহযোগিতায় ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা হবে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি সংকটের একটি ন্যায্য সমাধান প্রয়োজন, যখন আইনি বাধ্যবাধকতা থেকে বিচ্যুতি এবং সমস্ত ধরনের পদক্ষেপের উন্মুক্ত রেহাই ইসরাইলকে এই উত্তেজনা অব্যাহত রাখতে সহায়তা করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে চুক্তির মতো পদক্ষেপ নিয়েছে। ইরান তার পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সংকটের সমাধানের মাধ্যমেই এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা জোরদার করা সম্ভব। সৌদি আরব ইয়েমেন এবং লোহিত সাগরে সঙ্কট সমাধানের প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে, যেখানে হুথি হামলা আন্তর্জাতিক শিপিংকে হুমকির মুখে ফেলেছে। একইভাবে, তার দেশ সুদানে শান্তি ও স্থি’তিশীলতা পুনরুদ্ধারে তার দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং জেদ্দায় যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে তৃতীয় দফা আলোচনার আয়োজন করছে। ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, আফগানিস্তানকে এই অঞ্চল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায় এবং সন্ত্রাসীদের দয়ায় আর একা ছেড়ে দেওয়া যাবে না। সেজন্য দেশের মানবিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি করা জরুরি, যার কারণে সেখানে বিভিন্ন গ্রুপ ও মিলিশিয়া তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট সমাধান করা এবং সৌদি আরবের যুবরাজ এ ব্যাপারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। তিনি বলেন তার দেশ বিভিন্ন দেশের বন্দীদের মুক্তির ঘোষণা দিয়েছে এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক চলছে। সৌদি আরব বিরোধের পক্ষগুলোর মধ্যে মধ্যস্থ’তার জন্য তার প্রচেষ্টা বাড়াতে প্রস্তুত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct