চন্দনা বন্দ্যোপাধ্যায় , জয়নগর আপনজন: সুন্দরবনের কাশীনগরে এখনো আছে নৌকা, তবে নেই মাঝি,কিন্তু খাল পারাপারের ভাড়া মাত্র এক টাকা।আছে নৌকা। নেই মাঝি। তবু পারাপারের জন্য এই নৌকাই ভরসা। দক্ষিণ ২৪ পরগণার সুন্দরবনের কাশীনগরে। সাঁকো হিসেবে যার ওপর দিয়ে খাল পারাপার করেন বাসিন্দারা। এর জন্য তাঁদের দিতে হয় জনপ্রতি এক টাকা করে। স্থানীয়রা ছাড়াও নিয়মিত এই পথ ব্যবহার করেন এলাকায় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও ব্যবসায়ীরা।প্রায় ৪৫ বছর আগে এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ বৈদ্যর বাবা জ্যোতিষ বৈদ্য মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের কাশীনগরে এই খাল পারাপারের জন্য এই নৌকার ব্যবস্থা করেন। তখন নদীতে নাব্যতা থাকায় জল এসে খাল ভরিয়ে তুলত। পরবর্তী সময়ে নাব্যতা কমে যাওয়ায় খালেও জলের পরিমাণ কমতে থাকে। ধীরে ধীরে মজে যেতে থাকে এই খাল। জমা হতে শুরু করে কচুরিপানা।আর কচুরিপানা যত বাড়তে থাকে ততই কমতে থাকে নৌকা চালানোর জায়গা। এরপর তা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু খাল পার হতেই হবে। তাই আড়াআড়িভাবে দুটি নৌকা জলে ভাসিয়ে নৌকায় ওপরে বানিয়ে ফেলা হয় সাঁকো।যেটাই পারাপারের জন্য ব্যবহার করতে থাকেন যাত্রীরা। বিনিময়ে তাঁদের দিতে হয় এক টাকা করে। যা সংগ্রহ করেন জ্যোতিষ বৈদ্যর ছেলেরা।সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চালু থাকে এই নৌকা পরিষেবা। প্রতিদিন পারাপার করেন ৩০০-৪০০ জন যাত্রী। যাদের মধ্যে একটি অংশের মতে, ঐতিহ্য হিসেবে এই নৌকা থাকুক আবার আরেকটি অংশ চাইছেন নৌকা সরিয়ে পাকাপাকিভাবে সেতুর ব্যবস্থা হোক।স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন,আমরা প্রতিদিন এই নৌকার সাঁকো ব্যবহার করি। ‘কাশীনগর বাস স্ট্যান্ড থেকে বাজারে পৌঁছতে অনেকটা দেরি হয়। এই পথে গেলে সময় অনেক কম লাগে। সেজন্যই এক টাকার বিনিময়ে আমরা এই পথ ব্যবহার করি।আর এই পারাপারে আমাদের একটা সুন্দর অভিজ্ঞতা হয়।পুরো নস্টালজিয়ায় চলে যাই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct