আপনজন ডেস্ক: মিয়ানমারের সামরিক জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র ত্যাগ করে রাজনৈতিক সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। তবে এই আহ্বান বিরোধী পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী তথা রাষ্ট্র প্রশাসন পরিষদ (এসএসি) দেশটির বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী—যেমন, জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন এবং পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)—কে ‘সন্ত্রাসের পথ’ পরিহার করে রাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক ইস্যু সমাধানের আহ্বান জানায়। এসএসি জানায়, তারা চায় এসব গোষ্ঠী নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করুক।
সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতিক্রিয়া
গত বছরের অক্টোবরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো মিয়ানমারের বিভিন্ন অংশে বড় আক্রমণ শুরু করে এবং বেশ কিছু এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এতে সেনাবাহিনী তীব্র চাপে পড়েছে। তবে এসব গোষ্ঠী সামরিক জান্তার আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সেনা অভ্যুত্থানে অপসারিত সরকার, জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি), দ্রুত এই প্রস্তাব নাকচ করেছে।
এনইউজির মুখপাত্র নে ফোন লাত বলেন, এই প্রস্তাব আমাদের বিবেচনার মধ্যে নেই। এনইউজি তাদের প্রতিরক্ষার অংশ হিসেবে পিডিএফ গঠন করে। সেনাবাহিনী জনগণের বিক্ষোভ দমনে নৃশংস অভিযান চালানো শুরু করলে তারা এই পথে হাঁটে।
এদিকে মিয়ানমারের রাজনৈতিক বন্দীদের সহায়তা সংস্থা জানিয়েছে, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনাবাহিনী অন্তত ৫,৭০৬ জনকে হত্যা করেছে এবং প্রায় ২১,০০০ জনকে আটক করেছে। এছাড়া, গত মাসে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বাড়িয়েছে। ২০২০ সালের নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর কারচুপির ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান করে। তারা নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই প্রক্রিয়া এখনো এগোয়নি। ১ অক্টোবর থেকে তারা আদমশুমারি শুরু করবে বলে জানিয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct