সাবের আলি , বড়ঞা আপনজন: স্ত্রী অসুস্থ। তাই শিশু শিক্ষা কেন্দ্র সামলাচ্ছেন বৃদ্ধ স্বামী। পেশায় চাষি হয়েও ক্লাস নিচ্ছেন ছাত্রছাত্রীদের। প্রায় দেড়বছর ধরে এই ঘটনা ঘটে চলেছে বড়ঞা থানার বধূয়া বাগদীপাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার অভিভাবক ও বাসিন্দারা ওই বৃদ্ধকে ঘেরাও করে প্রায় দুইঘণ্টা আটকে রাখেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কেন্দ্রে প্রধান শিক্ষক মরিওম বিবি দির্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তাই তিনি স্কুলে আসেন না। কিন্তু তার বদলে স্কুলে ক্লাস করাচ্ছেন প্রধান শিক্ষিকার স্বামী ৭০ ঊর্ধ্বো শাহজাহান শেখ। যিনি আবার চোখেও ঠিকমত দেখতে পাননা বলে দাবি। প্রায় ২৫ বছর আগের বধূয়া বাগদী পাড়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্র শুরু হয় চারজন শিক্ষক নিয়ে। দু’জন অবসর নিয়েছেন। বর্তমানে দুজন শিক্ষক আছেন। স্কুলের ৮৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ান হয় ওই কেন্দ্রে।
অভিযোগ, প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্বে থাকা মরিওম বিবি দীর্ঘদিন স্কুলে আসেন না। তার পরিবর্তে স্কুলে এসে পড়ান তার স্বামী শাজাহান শেখ।
স্থানীয় বাসিন্দা জ্যোৎস্না বিবি বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে দেখছি প্রধান শিক্ষিকার বৃদ্ধ স্বামী স্কুলে পড়াচ্ছেন। তিনি কিছুই পড়াতে পারেন না। শুধু কঞ্চি নিয়ে এদিক ওদিক করে বেড়ান। এই নকল শিক্ষক দিয়ে স্কুলে চলতে পারে না। এর প্রতিবাদেই আমাদের বিক্ষোভ। অভিভাবকদের আরও দাবি, এই বৃদ্ধ শাজাহান শেখের নির্দেশেই স্কুলে নিম্নমানের মিড-ডে মিল দেওয়া। হচ্ছে প্রতিদিন। প্রতিবাদ করেও কোন সুরাহা হচ্ছে না। তাই অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধকে আটকে রাখা হয়। যদিও ঘণ্টা দুয়েক আটকে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হয় শাহজাহান শেখকে। তবে বৃদ্ধ শাজাহান শেখ বলেন, আমাকে সুপারভাইজার স্কুলে আসার অনুমতি দিয়েছেন। তাই আমি শিক্ষকতা করতে আসি। খাবারে গুণমান যথেষ্ট ভাল। তালিকা মেনেই খাবার দেওয়া হয়।
শুধু তাই নয়। ওই সেন্টারে বাথরুম থাকলেও বন্ধ রাখা হয়। জলের ট্যাপ আছে কিন্তু জল নেই। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা। সেন্টারের ছাত্র-ছাত্রীরা জল পান করতে গেলে স্কুলের পাশে বাড়িতে প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে পান করে। ইস্কুলের ছাদ ফুটো। তাই বৃষ্টি এলে জল পড়ে। বিল্ডিংএর দেওয়ালে সাইডে ফাটল। যে কোন সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা। এবিষয়ে বড়ঞা বিডিও গোবীন্দ দাস বলেন, এমন কাণ্ড মেনে নেওয়া যাবে না। দ্রুত বিষয়টির খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct