আপনজন ডেস্ক: রাজ্যে ওবিসি বাতিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের দ্রুত শুনানির আর্জি জানাল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এ ব্যাপারে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাদের আইনজীব কপিল সিব্বাল দাবি জানান বেশ কয়েকটি ওবিসি গোষ্ঠী যাদের বেশিরভাগ মুসলিম তাদের মর্যাদা বাতিল করা কলকাতা হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে করা মামলার জরুরি শুনানির জন্য একটি আবেদন তালিকাভুক্ত করা হোক।
কারণ, মামলাগুলো দিনের তালিকায় শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত থাকলেও সেগুলোর শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
কলকাতা হাইকোর্টের ্ এই রায়ের ফলে সরকারি চাকরি এবং সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতার উপর প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে যারা কোটার সুবিধা চান, তাঁদের জাতিগত শংসাপত্র দিতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। ফলে তারা সুযোগ বঞ্চিত হচ্ছে।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে উপস্থিত প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বাল বলেন, ওবিসি শংসাপত্র প্রদানের মতো বিষয়গুলি আটকে থাকায় অন্যান্য আবেদনের সাথে আবেদনটিও শোনা দরকার।
কপিল সিব্বালের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার তাকে জানায়, বিষয়গুলি বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং বেঞ্চ তাদের সামনে তালিকাভুক্ত মামলাগুলির শুনানি শেষ করার পরেই তা শুনানির জন্য গ্রহণ করবে। তবে মামলাটি আজ বুধবার শুনানির তালিকায় রাখা হয়েছে।]
কজ লিস্টে ২৭ নম্বরে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর আগেও ১৩ সেপ্টেম্বর একটি জরুরি কারণে মামলাটি উল্লেখ করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে শুনানির দিন এগিয়ে আনার বিষয়টি বিবেচনা করবে তারা। এর আগে গত ৫ আগস্ট শীর্ষ আদালত রাজ্য সরকারকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নতুন জাতিগুলির সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা এবং সরকারি খাতের চাকরিতে তাদের অপর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে বলেছিল। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে বেসরকারি মামলাকারীদের নোটিশ জারি করার সময়, বেঞ্চ কর্তৃপক্ষকে একটি হলফনামা দাখিল করতে বলেছিল, যাতে তারা রাজ্যের ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশনের পরামর্শ মেনে ওবিসি তালিকায় মুসলিম জনগোষ্ঠীকে সংশ্লিষ্ট করেছিল কিনা। উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বেশ কিছু সংখ্যালঘূ জনগোষ্ঠীকে দেওয়া ওবিসি মর্যাদা বাতিল করে হাইকোর্ট গত ২২ মে সরকারি চাকরি ও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের জন্য সংরক্ষণকে অবৈধ ঘোষণা করে। সব মিলিয়ে ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেওয়া ৭৭টি শ্রেণির সংরক্ষণ বাতিল করে দেয় হাইকোর্ট। পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণি (তফসিলি জাতি ও উপজাতি ব্যতীত) (চাকরি ও পদগুলিতে শূন্যপদ সংরক্ষণ) আইন, ২০১২ এর অধীনে ওবিসি হিসাবে সংরক্ষণের জন্য ৩৭টি শ্রেণি বাতিল করে। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারের দায়ের করা রায়ের স্থগিতাদেশের আবেদন-সহ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ৭৭টি সম্প্রদায়কে ওবিসি হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য অনুসৃত প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে এই আদালতে একটি হলফনামা দাখিল করতে হবে যেখানে উল্লেখ করতে হবে: (১) সমীক্ষার প্রকৃতি (২) ওবিসি হিসাবে মনোনীত ৭৭টি সম্প্রদায়ের তালিকায় কোনও সম্প্রদায়ের বিষয়ে কমিশনের (রাজ্য অনগ্রসর প্যানেল) সাথে পরামর্শের অভাব ছিল কিনা। ওবিসিদের সাব-ক্লাসিফিকেশনের আগে রাজ্য কোনও আলোচনা করেছিল কিনা তাও জানতে চেয়েছিল বেঞ্চ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct