আপনজন ডেস্ক: লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১৮২ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ৭২৭ জন।
সোমবার লেবানিজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্ত সীমান্ত হামলা এটি। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের ওপর এক নজিরবিহীন হামলা চালানোর পর ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। এতে এই অঞ্চলের চারপাশে থাকা ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো ক্রমবর্ধমান এ সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে, যার মধ্যে হিজবুল্লাহ অন্যতম। সোমবার ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা হিজবুল্লাহর তিন শতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা উত্তর ইসরায়েলে তিনটি স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
লেবানিজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের সীমান্তে প্রায় এক বছর ধরে চলা সহিংসতার মধ্যে এদিনের হামলা সবচেয়ে মারাত্মক।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আজ সকাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ও গ্রামে ইসরায়েলের হামলায় ১৮২ জন নিহত এবং ৭২৭ জন আহত হয়েছে। হতাহতদের মধ্যে শিশু, নারী ও প্যারামেডিকরা রয়েছে। এদিকে বিশ্ব শক্তিগুলো ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের প্রান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। কারণ সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সহিংসতার কেন্দ্রবিন্দু গাজার সঙ্গে ইসরায়েলের দক্ষিণ ফ্রন্ট থেকে হঠাৎ করে লেবাননের উত্তর সীমান্তে স্থানান্তরিত হয়েছে। দক্ষিণ লেবাননের জওতার গ্রামের ৬০ বছর বয়সী গৃহিণী ওয়াফা ইসমাইল বলেন, ‘আমরা বোমাবর্ষণের মধ্যে ঘুমাই ও জেগে উঠি...এটাই আমাদের জীবনের বাস্তবতা হয়ে উঠেছে।’ অন্যদিকে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি লেবাননের জনগণকে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুক্ত সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু এড়াতে বলেছেন। কারণ হামলা ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে। হাগারি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ‘লেবাননের সর্বত্র বিস্তৃত সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুগুলির বিরুদ্ধে (আরো) ব্যাপক ও সুনির্দিষ্ট হামলা চালাবে।’ পাশাপাশি তিনি বেসামরিকদের ‘নিজের নিরাপত্তার জন্য অবিলম্বে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরে যেতে’ বলেছেন। প্রসঙ্গত, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সশস্ত্র ইসলামি রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লার প্রধান ঘাঁটি লেবানন। দেশটির সরকারে এই গোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি নেই, তবে ক্ষমতার প্রকৃত নিয়ন্ত্রক তারাই। এই গোষ্ঠীটি ইরানের মদদপুষ্ট। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হিজবুল্লাহ। প্রতিষ্ঠান পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগে আছে গোষ্ঠীটির। তবে এর উল্লম্ফণ ঘটেছে গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে। ওই হামলার পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েরের উত্তরাঞ্চলে রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। জবাবে ইসরায়েলও সমান তালে হামলা অব্যাহত রাখে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct