নিজস্ব প্রতিবেদক , কলকাতা আপনজন: বিস্ফোরক অভিযোগ আরজি কর হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিনের প্রফেসর অপূর্ব বিশ্বাসের। আরজি করের নিহত তরুণী পড়ুয়ার ময়নাতদন্ত করার ক্ষেত্রে চাপ দেওয়া হয়েছিল। আজকের মধ্যে ময়না তদন্ত না হলে রক্ত গঙ্গা বয়ে যাবে। এক্স কাউন্সিলর বলে কেউ ছিলেন, যার হুমকিতে ময়নাতদন্তে তাড়াহুড় করে করতে হয়েছিল প্রায়। প্রায় সাড়ে ছ ‘ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সিবিআই দফতর থেকে বেরোনোর সময় জানালেন অপূর্ব বিশ্বাস। এদিকে টালা থানার এস আই চিন্ময় বিশ্বাস রবিবার দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যায় বেরিয়ে যান সিবিআই দফতর থেকে। জানা গেছে চিন্ময় বিশ্বাস হলেন আর জি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তকারী অফিসার। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে তিনি কেন নিহত তরুণী পড়ুয়া চিকিৎসকের ময়না তদন্ত ঐদিন সন্ধ্যার পর করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন তা নিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। তার জবানবন্দি সিবিআই রেকর্ড করে। রবিবার রাতে শ্রীরামপুরের বিধায়ক ডক্টর সুদীপ্ত রায়ের সিঁথির মোড়ের বাড়িতে ফের আরজি কর কাণ্ডে তদন্তে যান সিবিআই-এর একটি টিম।
এদিকে, শনিবারের পর ফের রবিবার আরজি করে তরুণী পড়ুয়া চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় বিরূপাক্ষ বিশ্বাস(বর্ধমান মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের প্রাক্তন রেসিডেন্ট সিনিয়র চিকিৎসক বর্তমানে সাসপেন্ড), অভিক দে (এস এস কে এম হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসক), ও সৌরভ পাল( আর জি করের পিজিটি এর ছাত্র) কে তলব করে সিবিআই। এছাড়াও টালা থানার সাব ইন্পেক্টর চিন্ময় বিশ্বাসকেও তলব করেছে সিবিআই। নির্ধারিত সময় মতো রবিবার বিরূপাক্ষ বিশ্বাস এসে হাজির হন সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দপ্তরে। টালা থানার সাব ইন্সপেক্টর ও আসেন সিবিআই দপ্তরে। সৌরভ পাল ও নির্ধারিত সময়ের কিছু পরে এসে উপস্থিত হন সেখানে। সিবিআই সূত্রে খবর, আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্রাইম সিনে ঘটনার দিন সেমিনার হলে কি করছিলেন ওই চিকিৎসকরা। কার ফোন পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন সেই সমস্ত নিয়েই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সূত্রের খবর। শুধু তাই নয় তাদের মোবাইল ফোন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই অফিসাররা। এর পাশাপাশি ইডি দপ্তরের পক্ষ থেকে শ্রীরামপুরের বিধায়ক ডক্টর সুদীপ্ত রায় কে ডেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসা বাদ করা হয়। আরজিকোর কান্দে ইতিমধ্যে হাসপাতালে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ গ্রেপ্তার হয়েছে সিবিআই এর হাতে। ইতিমধ্যে তিনি রয়েছেন সিবিআই হেফাজতে। একই সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছেন টালা থানা প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মন্ডল। এরপর রবিবার তালা থানার এএসআইকে ডাকা হল। গত ৯ বছর আর্জি করে মহিলা পড়ুয়া চিকিৎসকের ঢেউ উদ্ধারের পদ পুলিশের ভূমিকা কি ছিল পরপর ঘটনা কিভাবে এগিয়েছিল সেসব বিষয়ে এএসআইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। শনিবার এই ঘটনায় বিরুপাক্ষ এবং অভিক কে গভীর রাত পর্যন্ত সিপিওতে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। রাত দেড় টার পর সিরিয়াল থেকে বেরিয়ে যান বিরুপাক্ষ ও অভীক। বিরুপাক্ষকে প্রথমে কাকদ্বীপে বদলি করা হয়েছিল এই ঘটনা পরপরই তাকে সাসপেন্ড করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। আরজিকর কাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল কারণ তরুণী বরুয়া চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর এফ আই আর দায়ের হয়েছিল রাত বারোটায়। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে পুলিশ কমিশনার বিনীত কুমার গোয়েলকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। আরজি কর মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন ।তদন্তের একটি রিপোর্ট ইতিমধ্যে শীর্ষ আদালতে জমা দিয়েছে সিবিআই। যা দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। অপূর্ব বাবু জেরার শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান যেদিন ওই পড়ুয়া নিহত হয়েছিলেন সেদিন মেয়ের কাকা বলে পরিচয় দিয়ে কোন একজন এক্স কাউন্সিলর হুমকি দিয়েছিলেন ওই দিন ময়নাতদন্ত না হলে রক্ত গঙ্গা বয়ে যাবে। কে এই এক্স কাউন্সিলর তার সন্ধান পেতে চাইছে সিবিআই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct