আপনজন ডেস্ক: ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল খতিয়ে দেখার একটি সংসদীয় প্যানেল খসড়া আইন সম্পর্কে তাদের নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সমর্থন জোরদার করার জন্য দেশের বিভিন্ন সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের কাছ থেকে ১.২ কোটি ইমেল প্রতিক্রিয়া পেয়েছে।
যদিও অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের মুখপাত্র ড. এস কিউ আর ইলিয়াস দাবি করেছিলেন, এআইএমপিএলবি ৩.৪৮ কোটি, মুরাক ৮৯ লক্ষ এবং অন্যান্য ৯৫ লক্ষ ইমেল পাঠিয়েছে। ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে ভারতীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে জেপিসিতে পাঠানো ই-মেইলের সংখ্যা শেষ দিন পর্যন্ত ৫ কোটি ছাড়িয়েছে বলে তিনি দাবি করেছিলেন। তিনি এ নিয়ে বলেছিলেন, এটি ইসলামী শরিয়ার প্রতি তাদের দৃঢ় সংকল্প ও দৃঢ় অঙ্গীকার, তাদের ধর্মীয় পরিচয় এবং সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দৃঢ় সংকল্প প্রদর্শন করে।
অন্যদিকে সংসদীয় সূত্র জানিয়েছে, বিজেপি নেতা তথা সাংসদ জগদম্বিকা পালের সভাপতিত্বে ওয়াকফ সংশোধনী বিল সম্পর্কিত যৌথ কমিটিও নিজ নিজ মতামতের সমর্থনে নথি সহ ৭৫,০০০ প্রতিক্রিয়া পেয়েছে, কমিটিকে লোকসভা সচিবালয় থেকে অতিরিক্ত কর্মী চেয়ে অনুরোধ করেছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ইমেইলের জবাবগুলো খতিয়ে দেখতে এবং সেগুলো নথিভুক্ত করতে ১৫ জন অতিরিক্ত কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। গত মাসে কমিটি বিলটি নিয়ে সাধারণ জনগণ, এনজিও, বিশেষজ্ঞ, স্টেকহোল্ডার এবং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লিখিত পরামর্শ চেয়েছে। এক বিবৃতিতে কমিটি লোকসভা সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব, ৪৪০, পার্লামেন্ট হাউস অ্যানেক্স, নয়াদিল্লি-১১০০০১ ঠিকানায় তাদের মতামত পাঠাতে বলেছে অথবা jpcwaqf-lss@sansad.nic.in মেইল করতে বলেছে।
কমিটি সরকারি কর্মকর্তা, আইন বিশেষজ্ঞ, ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য এবং সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মতামত নেওয়ার জন্য পাঁচটি শহর সফরও শুরু করছে।
ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪ সম্পর্কিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবরের মধ্যে পাঁচটি রাজ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করতে মুম্বই, আহমেদাবাদ, হায়দরাবাদ, চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুতে যাবে।
২৬ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ে মহারাষ্ট্র সরকার, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক এবং মহারাষ্ট্র ওয়াকফ বোর্ডের প্রতিনিধিদের একত্রিত করে প্রথম পরামর্শ অনুষ্ঠিত হবে।
এই প্রাথমিক বৈঠকটি ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালনায় স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং ক্ষমতায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি মোকাবেলার দিকে মনোনিবেশ করে পরবর্তী পরামর্শের পথ প্রশস্ত করবে। পরদিন অর্থাৎ ২৭ সেপ্টেম্বর গুজরাতের আহমেদাবাদে জেপিসি আলোচনা করবে। উপস্থিত স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে গুজরাত সরকার, গুজরাত ওয়াকফ বোর্ড এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
এই পরামর্শের মাধ্যমে, প্যানেল ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের মূল দিকগুলি পরীক্ষা করবে, যার মধ্যে রেকর্ডগুলির ডিজিটাইজেশন, আরও কঠোর নিরীক্ষা প্রক্রিয়া, দখলদারিত্ব মোকাবেলায় বর্ধিত আইনি ব্যবস্থা এবং ওয়াকফ পরিচালনার বিকেন্দ্রীকরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
২৮ সেপ্টেম্বর জেপিসি হায়দরাবাদে চলে যাবে, যেখানে ভারতের বেশ কয়েকটি বিশিষ্ট ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। হায়দরাবাদে এই আলোচনায় অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার ওয়াকফ বোর্ড এবং উভয় রাজ্যের রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের অংশগ্রহণকারীরা অংশ নেবে। পাশাপাশি ছত্তিশগড় ওয়াকফ বোর্ডও এই আলোচনায় অংশ নেবে। এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচনার জন্য তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে এবং ১ অক্টোবর কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে আলোচনার জন্য যাবে জেপিসি।
ওয়াকফ আইনের সংস্কারের জন্য একটি বিস্তৃত পদ্ধতি নিশ্চিত করার জন্য পাঁচটি রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সরকারি কর্মকর্তা, আইন বিশেষজ্ঞ, ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য এবং সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করার লক্ষ্যে কমিটির দেশব্যাপী পরামর্শে অভিযান।
ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪ আইনে পরিণত হলে সারা দেশে নিবন্ধিত ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা পরিচালনা ও নিয়স্ত্রণ করবে। জেপিসির দেশব্যাপী পরামর্শের লক্ষ্য হল ওয়াকফ আইনের সংস্কারের জন্য একটি বিস্তৃত পদ্ধতি নিশ্চিত করতে পাঁচটি রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সরকারি কর্মকর্তা, আইন বিশেষজ্ঞ, ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য এবং সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct