আপনজন ডেস্ক: অধীর রঞ্জন চৌধুরীর পরিবর্তে শুভঙ্কর সরকারকে পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি হিসেবে নিয়োগ করেছে কংগ্রেস। শুভঙ্কর সরকারকে এআইসিসি সচিবের বর্তমান পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় কংগ্রেসের তরফে দলের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রধান হিসেবে শুভঙ্কর সরকারকে নিয়োগ করেছেন।
একই সঙ্গে বিদায়ী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর অবদানের প্রশংসা করছে দল। অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয় ও মিজোরামের দেখাশোনা করতেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক শুভঙ্কর সরকার। তবে,
জাতীয় ও রাজ্য স্তরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ ইউনিটের পরবর্তী সভাপতি বেছে নেওয়ার বিষয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব রাজ্য নেতাদের কাছ থেকে মতামত নিয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্তরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে যে সমন্বয় ও সমর্থন দেখা গিয়েছে, কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব, বিশেষ করে অধীর চৌধুরীর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট না হওয়ার কারণ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পরোক্ষ ভাবে অধীর চৌধুরিকেই দায়ী করেছিলেন। এমনকী মল্লিকার্জুন খাড়গেও বিরাগভাজন ছিলেন অধীর চৌধুরির উপর। সেই জায়গা থেকে থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এবং জাতীয় রাজনীতিতে ইন্ডিয়া জোটে তৃণমূল কংগ্রেসরে প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখতে এই বদল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সেই সময় রাহুল গান্ধির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শুভঙ্কর সরকারকেই দল বেছে নিল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে। তবে অনেকে মনে করছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরির সঙ্গে তৃণমূলের চলমান বিবাদকে ঘিরেই তাকে অপসারণের পথ স্পষ্ট করে দেয় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেৃতত্ব। কিছুদিন, আগেই তার ইঙ্গিত মিলেছিল। গত ২৯ জুলাই দিল্লিতে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে অধীরের ইস্তফার কথা জানিয়ে তাকে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত নেতা গুলাম মীর। তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেছিলেন অধীর। যদিও বহরমপুর কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের কাছে হারের পর তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তার পর থেকে কে হবে প্রদেশ খংগ্রেস সভাপতি তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। চারটি নাম উঠে আসছিল। তারা হলেন, বাগমুণ্ডির প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাতো, ২০১৫ সালে সিপিএম ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া আব্দুস সাত্তার এবং মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর মালাকার।
উল্লেখ্য, নয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার ২০২৪ সালের ৩০ অগাস্ট সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এবার তিনি হলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct