সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: বুধবার সন্ধ্যায় নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। মুখ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষ হতেই সল্টলেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান স্থল থেকে সমস্ত টেবিল ফ্যান সরে গেল। ডেকোরেটর সমস্ত টেবিল ফ্যান গাড়িতে করে নিয়ে চলে যায়। চাঞ্চল্য দেখা দেয় অবস্থানস্থলে। কারণ তখনও সেখানে আন্দোলনকারীরা আন্দোলন চালাচ্ছেন। নির্দিষ্ট সময় থেকে বেশ কিছুটা দূরত্বে অর্থাৎ সন্ধ্যে পোনে সাতটা নাগাদ জুনিয়র চিকিৎসকদের ৩০ জনের প্রতিনিধি দল নবান্ন সভাঘরে পৌঁছন। টানা আড়াই ঘন্টা চলে এই বৈঠক। চিকিৎসকদের মোট পাঁচটি দাবির মধ্যে মীমাংসিত না হওয়া দুটি দাবি নিয়ে এবং হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় বৈঠকে। জুনিয়র চিকিৎসকদের বুধবার সন্ধ্যায় নবান্নে বৈঠকের জন্য সময় দেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে অতি দ্রুত কাজে ফেরার জন্য আবেদন জানানো হয় এবং বৈঠকে বসতে সম্মতি প্রকাশ করা হয়। বুধবার সন্ধ্যে সাড়ে ছটায় বৈঠকের সময় নির্ধারিত হয়। তবে সন্ধ্যে সোয়া ছ’ টার মধ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের পৌঁছতে হবে নবান্ন সভা ঘরে বলে টার্গেট দেওয়া হয়। জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বুধবার দুপুরে জিবি বৈঠকে বসে অতি দ্রুত কিভাবে কর্ম বিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফেরা যায় এবং তাদের বাকি দাবিগুলি কিভাবে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আদায় করে আনা যায় তা নিয়ে দীর্ঘ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এরপরই বুধবার আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে ই-মেইল করে বৈঠকে বসার জন্য আবেদন জানানো হয়। এদিকে, অব্যাহত জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। এই আবহে বুধবার ফের বৈঠকে বসতে চেয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ইমেল করেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তাদের বক্তব্য, পাঁচ দফা যে দাবি করা হয়েছিল তার মধ্যে চার এবং পাঁচ নম্বর পয়েন্ট এখন পুরোপুরি মানা হয়নি। তাই রাজ্য সরকারের তরফে সদার্থক উত্তর পাওয়ার জন্যই এবার নবান্নকে ই- মেল পাঠান জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
বুধবার ইমেলের মধ্যে দুটি দাবি নিয়ে সরব হন চিকিৎসকেরা। সেগুলি হল- রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। আর রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভয়মুক্ত পরিবেশ অর্থাৎ থ্রেট কালচার বন্ধ করতে হবে রাজ্য সরকারকে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার কালীঘাটের বৈঠকের পর কলকাতা পুলিশ ও স্বাস্থ্য় ভবনে আধিকারিক পদে একাধিক রদবদল হয়েছে। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে। তারপরে জুনিয়র চিকিৎসকেরা আন্দোলন তোলার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct