নিজস্ব প্রতিবেদক, বসিরহাট, আপনজন: দিনের পর দিন প্রাণ হাতে নিয়ে করতে ঝুঁকির পারাপার। সুন্দরবনের সেতুর বেহাল কঙ্কালসার অবস্থা। অটো-টোটো গেলেই নড়ে ওঠে গোটা সেতু। ক্ষোভে ফুঁসছেন সুন্দরবনের বাসিন্দারা। বসিরহাটের সুন্দরবনের হাসনাবাদ ব্লকের মাখালগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের চক কুলিয়াডাঙ্গা গ্রামের ডাঁসা নদীর উপরে রয়েছে একটি কংক্রিটের ব্রিজ। সেই ব্রিজ প্রায় ৫০ বছর পুরনো। বর্তমানে সেই সেতুর অবস্থা এতটাই নড়বড়ে যে একপ্রকার প্রাণ হাতে নিয়েই যাতায়াত করতে হয় হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে। শহর টাকি ও হাসনাবাদ ব্লকের সঙ্গে সুন্দরবনের সন্দেশখালি ১নং ও মিনাখাঁ ব্লকের সংযোগকারী এই সেতু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হাসনাবাদ থেকে ন্যাজাট বা মিনাখাঁ বা মালঞ্চ যেতে গেলে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। এই ব্রীজের উপর দিয়ে গেলে একদিকে যেমন সময় বাঁচে অন্যদিকে কমে যায় তেল খরচ। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে কংক্রিটের এই সেতুটি। বাম আমলের প্রথম দিকে এই সেতুটি নির্মিত হয়। তারপর থেকে এই সেতুর সংস্কারের কোনো কাজই হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে বেশ কয়েকটি রুটের অটো, টোটো এমনকি চারচাকা গাড়িও। একদিকে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যেমন এই ব্রিজটি ব্যবহার করেন। অন্যদিকে কলেজ পড়ুয়া থেকে শুরু করে টাকি গ্রামীণ হাসপাতাল যাওয়ার অন্যতম শর্টকাট রাস্তা এই সেতু। যার ফলে এই সেতুটিকে ঘিরে তাদের দৈনন্দিন জীবন নির্ভর করে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ৮ ফুট চওড়া ও ১০০ ফুট লম্বা এই ব্রিজে দুটি অটো পাশাপাশি যাতায়াত করতে পারে না। অন্যদিকে যাত্রী বোঝাই অটো বা টোটো ওই ব্রিজের উপর দিয়ে গেলে পুরো সেতুটি দুলে ওঠে। কোথাও বেরিয়ে রয়েছে লোহার শিক, আবার কোথাও খসে পড়েছে চাঙড়। আর ব্রিজের উপরে কংক্রিট বা পিচের রাস্তার কোনো বালাই নেই। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ আরো বাড়ে। সেতুর উপরে জল জমে এক প্রকার নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায় স্থানীয় মানুষদের। যর ফলে বেজায় ক্ষুব্ধ এই এলাকার মানুষ। হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির কার্য্যালয় থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে এই সেতু। দীর্ঘদিন স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতিতে জানালেও সে বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেননি বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আমিরুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের করা প্রশ্নে তিনি বলেন, “আপনারা বললেন তাই আমি বিষয়টি জানলাম। পঞ্চায়েত সমিতির তার নিজস্ব সংসদীয় এলাকায় সদস্য রয়েছে। গ্রামবাসীরা যদি সেই সদস্য বা দপ্তরের বিষয়টি জানতেন আমরা নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নিতাম। তবে মানুষের যখন অসুবিধা হচ্ছে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো ও দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করবো।” যদিও বিষয়টি নিয়ে হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি এস্কেন্দার গাজী বলেন, “সেতুটি দুর্বল আছে, বিষয়টি সঠিক, আমরাও দেখেছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে আমরা একটি প্রস্তাব দিয়েছি। দ্রুত যাতে ব্রিজটির সংস্কারের কাজ শুরু হয় সেই চেষ্টা করবো।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct