নিজস্ব প্রতিবেদক, বারাসত, আপনজন: প্রথমে শাশুড়ীকে খুন। তারপর নিজের স্ত্রী কে খুন করে।এরপর যদি জেলের বাইরে থাকতো তাহলে আর কতই না খুন করতো এই অভিজিৎ।এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেন সরকারি আইনজীবী।দেখতে দেখতে ৭ টি বছর কেটে গেছে।অবশেষে বারাসত আদালত অভিজিৎ দাসগুপ্ত কে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল বুধবার।
সালটা ২০১৭,নিজের স্ত্রীকে ঘরের মধ্যেই ছুরি দিয়ে পেটে কেটে ঘর বন্ধ করে রেখে দেয় অভিজিৎ।একদিন পর স্থানীয়রা উদ্ধার করে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয়।কলকাতার সরকারি হাসপাতালেই মৃত্যু হয় অভিজিৎ এর স্ত্রী সুনিতা দাসগুপ্ত’র।
এই সুনিতাই তিনবছর আগে তার মা কে খুনের অপরাধে স্বামীকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনে।অভিজিৎ তার শাশুড়ী কে খুন করেছিল ছত্রিশগড়ে।সেই অপরাধে তার জেল হয়।স্ত্রী সুনিতাই তাকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনে।তারপর বারাসত সুবর্ণপত্তম এলাকায় এক বাড়িতে ভাড়া থাকতো।এবার সেই সুনিতাকেই খুন করল তার স্বামী অভিজিৎ। খুনের নৃশংসতা ছিল আলাদামাত্রা। প্রথমে ছুরি দিয়ে স্ত্রীর কপালে ও নাকে আঘাত করে।তারপর ছুরি দিতে পেট রীতিমতো ফেরে দেয়।শুধু তাই নয়,রসুন থেতো করে পেটে দিয়ে গামছা দিয়ে বেধে রাখে।সেইসময় তার ১২ বছর ছেলে বাধা দিতে এলে ছেলেকেও গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখায়।এরপর অভিজিৎ দুজনকে ঘর বন্ধ করে রেখে পালিয়ে যায়।পরে বাড়িওয়ালা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।পাশাপাশি বারাসত থানায় অভিজিৎ ও সুনিতার সন্তান কে তুলে দেয় এবং অভিযোগ জানায়।বারাসত থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে অভিজিৎ দাসগুপ্তকে।
এই সাত বছর অভিজিৎ জেলেই ছিলেন। বুধবার যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল বারাসত এডিজে ৪র্থ কোর্ট বিচারপতি সৌগত চক্রবর্তী। ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৪৯৮ ধারায় ৩ বছরের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন তিনি। এই অপরাধে মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত হন অভিজিৎ।বর্তমানে অভিজিৎ এর ছেলে রামকৃষ্ণ মিশনে আছে বলে জানান সরকারি আইনজীবী মনোজ প্রামাণিক। সাজা ঘোষনার পর পুলিশের সঙ্গে নির্লিপ্তভাবে হেঁটে যেতে দেখা যায় অভিজিৎকে। তার চোখে মুখে কোন অনুশোচনা ধরা পড়েনি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct