এম মেহেদী সানি, কলকাতা, আপনজন: নবান্ন সভাঘরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সোমবার এসডিওদের এনসিএল শংসাপত্র প্রদানের জন্য আদেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে এসডিও’র কাছ থেকে এনসিএল শংসাপত্র না মেলায় চাকরি পরীক্ষা ও ভর্তির ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে ওবিসিরা। সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেয় সংখ্যালঘু সংগঠন ‘পিআইবি।’ সরব হয়েছিলেন বিভিন্ন মহলের বিশিষ্টজনরা। এমনকি ওবিসি এনসিএল শংসাপত্র না মেলায় এ বছর রাজ্যে মুসলিম ডাক্তারি পড়ুয়া কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও যখন বেড়ে চলেছে তখন এনসিএল শংসাপত্র না পাওয়া ছাত্র-ছাত্রী, চাকরি প্রার্থীদের সমস্যার কথা তুলে ধরে খবর করে ‘আপনজন।’ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তার সমাধানের আশ্বাসও দেন রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। শিক্ষা দফতরে ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। উদ্যোগ নেন সাংসদ সামিরুলও। শেষে মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে সোমবার এসডিও’দের এনসিএল শংসাপত্র প্রদানের জন্য আদেশ দিলেন। মমতা বলেন, ‘যারা পড়াশোনা করছে তাদের কিন্তু অনেক এসডিওরা (এনসিএল) সার্টিফিকেট দিচ্ছেন না, সরকারি নির্দেশিকা সত্ত্বেও। মেধাশ্রী প্রকল্পে ওবিসি যারা সুযোগ পান তারাও সেই সুযোগ পাচ্ছেন না। এসডিওদের বলা হচ্ছে দয়া করে ওটার (ওবিসি সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়) সঙ্গে এটা মেলাবেন না। এটা চলমান প্রকল্প, এটা নিয়ে কোর্টের কিন্তু কোন রায় নেই।’ এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসডিওদের প্রতি অনুরোধ করেন ‘শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাটা যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেটা কিন্তু এসডিওরা দেখে নেবেন দয়া করে।’ নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের সমস্ত জেলা শাসকদের কাছে এই নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে ছাত্র-ছাত্রী থেকে চাকরি প্রার্থীদের এনসিএল শংসাপত্র পেতে আর কোনো অসুবিধা থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে ওবিসি মামলায় হেরে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। আগামী ১৩ ই সেপ্টেম্বর সেই মামলার পরবর্তী শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে সে কথা স্মরণ করিয়ে এ দিন ওই বৈঠক থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওবিসি ডিপার্টমেন্টকে তৎপরতা গ্রহণের নির্দেশ দেন। বলেন, ‘ওবিসি ডিপার্টমেন্ট কে বলব ওবিসি’র যে কেসটা পড়ে আছে সেটা নিয়ে গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। যে তথ্যগুলো বাকি আছে সেগুলো দিতে হবে, যেন কোনো ঘাটতি না থাকে।’ উল্লেখ্য ২৭শে আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি বাতিলের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি ছিল । এই মামলায় প্রয়োজনীয় আরও তথ্য জমা দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের হয়ে আরও কিছুটা সময় চান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct