আপনজন ডেস্ক: মাসখানেক আগে আরজি কর হাসপাতালে এক পিজিটি চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ধারাবাহিক প্রতিবাদে রবিবার রাতে কলকাতার রাস্তায় নেমে আসেন সর্বস্তরের মানুষ— বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র, থেকে শুরু করে রিকশাচালক ও জুনিয়র ডাক্তাররাও। পিজিটি ধর্ষণ ও খুনের মামলার সমস্ত দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে যে স্নাতকোত্তর ইন্টার্নের মৃতদেহ ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাওয়া গিয়েছিল তার মা বলেন, তার একটি সন্তান ছিল এবং এখন সমস্ত প্রতিবাদকারী চিকিৎসকরা তার সন্তান। দক্ষিণ কলকাতায় ৪০টিরও বেশি স্কুলের প্রায় ৪০০০ প্রাক্তন পড়ুয়া, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা, নির্যাতিতার জন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে ২ কিলোমিটার পথ হাঁটেন। গড়িয়াহাট থেকে রাসবিহারী এভিনিউ ধরে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের মোড়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন বয়সের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে স্লোগান দেন। বিনোদিনী বালিকা বিদ্যালয়, মিত্র ইনস্টিটিউশন, গড়ফা উচ্চ বিদ্যালয়, কারমেল উচ্চ বিদ্যালয় এবং সেন্ট জনস ডায়োসেসানের মতো প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করেন: কারার এই লৌহ কোপাট, ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট...।
আয়োজক গরিমা ঘোষ বলেন, ‘অভয়ার নৃশংস হামলা-হত্যায় জড়িত সকলের শাস্তির মূল দাবির পাশাপাশি আমরা সকল কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা চাই।
আন্দোলনের পরিচিত মুখ লগ্নজিতা বলেন, আমাদের বোন ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব না। মাসের পর মাস চললেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করব। প্রায় ১০০ জন মানুষ হাতে টানা রিকশা নিয়ে উত্তর কলকাতার হেদুয়া পার্ক থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত মিছিল করেন।বিহারের দ্বারভাঙ্গার বাসিন্দা রিকশাচালক রমেশ্বর শ বলেন, ‘আমরা আমাদের মেয়ে অভয়ার জন্য ন্যায়বিচার চাই। সরকারি এনআরএস হাসপাতালের কয়েকশো জুনিয়র ডাক্তার শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মিছিল করেন। এসপ্ল্যানেডে সমাবেশের শেষ স্থলে নিহত চিকিৎসকের বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন। ভুক্তভোগীর মা বলেন, ‘সেই রাতে আমার মেয়ে যে যন্ত্রণা ভোগ করেছে, তা যখনই ভাবি, তখনই শিউরে উঠি। সমাজের সেবা করার স্বপ্ন ছিল তার, এখন এই প্রতিবাদকারীরা সকলেই আমার সন্তান।’ ১০ অগাস্ট থেকে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু আর জি কর হাসপাতালের কয়েকশো জুনিয়র ডাক্তার বিকেল ৫টায় মানববন্ধন করে তেরঙ্গা হাতে জাতীয় সঙ্গীত গাইলেন। বাম সংগঠন এসএফআই ও ডিওয়াইএফআইয়ের মঞ্চের কাছে অন্যান্য নাগরিকরা তাদের সাথে যোগ দেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct